উত্তর শাহবাজপুর হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি‘র উদ্বোধন
একটি অনুকরণীয় প্রকল্প - লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব সম্পাদক তাইসির মাহমুদ
- আপডেট সময় : ০৬:৩৪:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০২২
- / 1173
অন্ধকারে আলো শ্লোগাণ নিয়ে কাজ করা শিক্ষা, লেখক ও সামাজিক অনুপ্রেরণাবান্ধব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষরোপন করা হয়েছে।
সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি – শিরোনামে অস্বচ্ছল পরিবার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষরোপন প্রকল্পের অংশ হিসাবে বড়লেখা উপজেলার এই বিদ্যাপীঠে বৃক্ষরোপন করা হয়।
১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে আড়ম্বরহীনভাবে মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি‘র ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা লাগিয়ে উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশের বাইরে সংবাদকর্মীদের প্রথম ও বৃহৎ সংগঠন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার সম্পাদক তাইসির মাহমুদ।
প্রধান অতিথি তাইসির মাহমুদ বলেন, সমছুল- করিমা ফাউন্ডেশনের সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি -একটি অনুকরণীয় প্রকল্প। মূলত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলদ ও ঔষধি গাছ রোপন কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো – শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজ ক্যাম্পাসে উৎপাদিত ফলমূল খাওয়ার আনন্দ এবং কিছুটা হলেও পুষ্টি পূরণের সুযোগ সৃষ্টি করা।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি অস্বচ্ছল পরিবারেও এই কার্যক্রমটি করছে। যাতে অস্বচ্ছল পরিবার বারো মাস কোন না কোন ঔষধি ও ফলমূল নিজের উৎপাদিত গাছ থেকে পেতে পারেন।
লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ বলেন, সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি গতানুগতিকভাবে চলা বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর মতো নয়। সারা বছর এইসব গাছ লাগানো যায়। গাছ নির্বাচন, রোপন ও পরিচর্চার বিষয়টি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে করা হয়,যা বিজ্ঞান ভিত্তিক। ফলদ গাছের চারা এমনভাবে নির্বাচন করা হয় যেন এখান থেকে সারা বছর কোন না কোন ফল পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহবাজপুর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ইউকের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রহিম , মাদ্রাসার সুপারেন্টেন্ড মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ , মাওলানা আব্দুন নুর, ও মাষ্টার এবাদুর রহমান।
প্রবাসী সংগঠক মুহাম্মদ রহিম সমছুল- করিমা ফাউন্ডেশনের বৃক্ষরোপন কার্যক্রমটি অত্যন্ত বুদ্ধিদ্বীপ্ত এবং মানবিক উল্লেখ করে বলেন, এই রকম উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনের ফলে তাদের মধ্যে সৃজনশীলকাজের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। শিক্ষার্থীরা বৃক্ষরোপনের মতো মানবিক কাজে অনুপ্রেরণা পাবেন।
মাদ্রাসার সুপারেন্টেন্ড মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, সবুজে হাসি সবুজে বাচি প্রকল্প থেকে ১৫ জাতের ফলদ ও ঔষধি চারা নিজ খরচে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।শিক্ষার্থীরা এগুলো পরিচর্যার মাধ্যমে ফলমুল খাবেন এবং দৃষ্টিনন্দন বাগান পরিচর্চার মাধ্যমে তাদের মধ্যে সৃজনশীনকাজের আগ্রহ সৃষ্টি হবে বলে মনে করি।
মাওলানা আব্দুন নুর বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরকম উদ্যোগ আরও ছড়িয়ে দিতে পারলে সমাজে ইতিবাচক কাজের উদাহরণ হবে। তারা যখনই ফলমূল খাবেন এবং দৃষ্টিনন্দন বাগান দেখবেন তখন এর আলোকিত দিকটি তাদের ব্যক্তিজীবনে প্রভাবিত করবে বলে আমার বিশ্বাস ।
মাষ্টার এবাদুর রহমান এই প্রজেক্টটি ভবিষ্যতে আরও বেশী করে শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেবার অনুরোধ করে বলেন, শুধু মানুষ নয়, পাখিরাও এই ফল খাবার সুযোগ পাবে।
উত্তর শাহবাজপুর হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর সাংবাদিক মো: ইবাদুর রহমান জাকির মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ,অতিথিবৃন্দ এবং স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, সকলের সহযোগিতায় বৃক্ষরোপন সম্পন্ন হয়েছে। মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি ফাউন্ডেশনও গাছগুলোর সার্বিক পরিচর্যা ও খেয়াল রাখবে যাতে গাছগুলো নষ্ট না হয় এবং দ্রুত ফলন উপযোগি হয়।
বৃক্ষ রোপনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক মো: সাইফুল ইসলাম, মাওলানা মজির উদ্দিন, মাওলানা জাহেদুর রহমান ও শিক্ষাথীবৃন্দ।
মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ফলদ ও ঔষধি বাগানের সার্বিক তত্বাবধানে থাকবেন মাওলানা জাহেদুর রহমান মাষ্টার এবাদুর রহমান ও মাওলানা মো: তারেক জামিল।
প্রসঙ্গত অন্ধকারে আলো শ্লোগাণ নিয়ে ২০০৪ সাল থেকে সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন বিভিন্ন মানবিক , শিক্ষা- শিক্ষক সম্পর্কিত এবং সমাজসেবামূলক ধারাবাহিক নিজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে। ‘মানবিক স্বজন’ এর আওতায় নিভৃতে বঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের ঘরে খাবার সামগ্রী বিতরণ। ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’ প্রকল্পের মাধ্যমে অস্বচ্ছল ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপন, মৌলিক ও সৃজনশীল প্রকল্প- ’সৃষ্টি ঘর’ এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের বই প্রকাশ, পবিত্র রমজান মাসে নিন্মবিত্ত পরিবারের জন্য ‘হাসি মুখে ইফতার’, প্রবীন অসহায়দের জন্য –’একচিলতে হাসি’, কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ‘আমার স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূলে কাজ করে আসছে ।
























