ঢাকা ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু

আলো জ্বালিয়ে যে দাবি জানালো উত্তরের মানুষ
‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তাল

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / 108

তিস্তা ব্যারেজ বাস্তাবয়নের দাবিতে মশাল প্রজ্বলন

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা কাজ শুরু করার দাবি জানিয়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ ফের আন্দোলনের চেতনায় জেগে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর উভয় তীরে একযোগে মশাল প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলা—লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধার তিস্তাপাড়ের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। মশাল হাতে অংশগ্রহণকারীরা একসঙ্গে স্লোগান দেয়— ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’।

তিস্তাপাড়ের নদীমাতৃক জনগণ জানিয়েছেন, উত্তরের পাঁচ জেলায় প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তিস্তা নদীর ওপর নির্ভরশীল। তারা অভিযোগ করেন, বর্ষাকালে ঘনঘন বন্যা, পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ নদীভাঙন এবং শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট—এই তিন দুর্যোগই এখন তিস্তাপাড়ের মানুষের নিত্যদিনের বাস্তবতা।

তারা বলেন, বছরগুলো ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার আশ্বাস পাচ্ছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখেননি। তাই আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নভেম্বর মাসেই নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শুরু না হলে বৃহত্তর আন্দোলন মুখে তোলা হবে।

তিস্তা নদীর ন্যায্য পানিবণ্টন ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে চলতি বছরে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ একাধিক কর্মসূচি আয়োজন করেছে। গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তার দুই তীরে পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে একযোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিল লাখো মানুষ। এরপর ৫ অক্টোবর জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হয় এবং ৯ অক্টোবর উপজেলা শহরগুলোতে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন সূত্রে জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান রংপুরের কাউনিয়ায় গণশুনানিতে অংশ নিয়ে দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতি দেন। পরে তিনি জানান, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র কাজ শুরু হবে।

প্রধানত ১০ বছরের মেয়াদে দুই ধাপে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম ধাপে পাঁচ বছরে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে—যার মধ্যে চীন থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৬ হাজার ৭০০ কোটি এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “সরকার যদি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু না করে, তবে তিস্তাপাড়ের মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “সরকার তো ইতিমধ্যে প্রথম ধাপের জন্য ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এখন সময় এসেছে কথা নয়, কাজ শুরুর।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আলো জ্বালিয়ে যে দাবি জানালো উত্তরের মানুষ
‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে উত্তাল

আপডেট সময় : ১০:৩৪:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা কাজ শুরু করার দাবি জানিয়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ ফের আন্দোলনের চেতনায় জেগে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর উভয় তীরে একযোগে মশাল প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলা—লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধার তিস্তাপাড়ের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। মশাল হাতে অংশগ্রহণকারীরা একসঙ্গে স্লোগান দেয়— ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’।

তিস্তাপাড়ের নদীমাতৃক জনগণ জানিয়েছেন, উত্তরের পাঁচ জেলায় প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তিস্তা নদীর ওপর নির্ভরশীল। তারা অভিযোগ করেন, বর্ষাকালে ঘনঘন বন্যা, পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ নদীভাঙন এবং শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট—এই তিন দুর্যোগই এখন তিস্তাপাড়ের মানুষের নিত্যদিনের বাস্তবতা।

তারা বলেন, বছরগুলো ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার আশ্বাস পাচ্ছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখেননি। তাই আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নভেম্বর মাসেই নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শুরু না হলে বৃহত্তর আন্দোলন মুখে তোলা হবে।

তিস্তা নদীর ন্যায্য পানিবণ্টন ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে চলতি বছরে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ একাধিক কর্মসূচি আয়োজন করেছে। গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তার দুই তীরে পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে একযোগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিল লাখো মানুষ। এরপর ৫ অক্টোবর জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পাঠানো হয় এবং ৯ অক্টোবর উপজেলা শহরগুলোতে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন সূত্রে জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান রংপুরের কাউনিয়ায় গণশুনানিতে অংশ নিয়ে দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতি দেন। পরে তিনি জানান, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র কাজ শুরু হবে।

প্রধানত ১০ বছরের মেয়াদে দুই ধাপে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম ধাপে পাঁচ বছরে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে—যার মধ্যে চীন থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৬ হাজার ৭০০ কোটি এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “সরকার যদি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু না করে, তবে তিস্তাপাড়ের মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “সরকার তো ইতিমধ্যে প্রথম ধাপের জন্য ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এখন সময় এসেছে কথা নয়, কাজ শুরুর।”