ঢাকা ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু

আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০১৯
  • / 1511
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে ১ জুলাই থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে। এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনে সময় ও ভোগান্তি কমবে আর ডিজিটাল দেশ গড়ার পথে একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

তথ্যমতে, আধুনিক বিশ্বে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় ই-পাসপোর্ট চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বাস্তবায়ন ব্যয় ধরে ২০১৭ সালে ই-পাসপোর্ট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেরিডোস জেএমবিএইচের সঙ্গে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বলা হয়েছিল, ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। এরপর বলা হয়, ২০১৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে চলতি মাসের ৩০ জুনের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে চলতি মাসেই ই-পাসপোর্টের সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। আগামী মাস থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডেটা বেইসে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ হবে বয়সভেদে পাঁচ ও ১০ বছর। ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না। তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা নবায়ন করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুনিম হাসান ভোরের কাগজকে বলেন, আগামী জুলাই থেকে যাতে নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। ফি নির্ধারণ কমিটি ৪৮ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য সাড়ে তিন হাজার (২১ দিন), জরুরি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা (সাত দিন) ও অতি জরুরি সাড়ে সাত হাজার (এক দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ বছরের সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার টাকা, জরুরি ৭ হাজার টাকা এবং অতি জরুরি ৯ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট প্রকল্প ৩ কোটি পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সে জন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হবে। পরবর্তী সময়ে ওই কারখানাতেই পাসপোর্ট ছাপা হবে। বর্তমানের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, তা ই-পাসপোর্টে থাকছে না। সেখানে থাকবে পলিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রসঙ্গত, অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ই-পাসপোর্টে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ থাকবে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি) তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। আর ই-পাসপোর্টের সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে পিকেডিতে (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি)। আন্তর্জাতিক এই তথ্যভাণ্ডার পরিচালনা করে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও)। ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই তথ্যভাণ্ডারে ঢুকে তথ্য যাচাই করতে পারবে। এর ফলে পাসপোর্ট নিয়ে জালিয়াতি কঠিন হবে। সে সুবাদে জনভোগান্তি কমবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট

আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০১৯

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে ১ জুলাই থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে। এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনে সময় ও ভোগান্তি কমবে আর ডিজিটাল দেশ গড়ার পথে একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

তথ্যমতে, আধুনিক বিশ্বে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় ই-পাসপোর্ট চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বাস্তবায়ন ব্যয় ধরে ২০১৭ সালে ই-পাসপোর্ট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেরিডোস জেএমবিএইচের সঙ্গে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বলা হয়েছিল, ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। এরপর বলা হয়, ২০১৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে চলতি মাসের ৩০ জুনের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে চলতি মাসেই ই-পাসপোর্টের সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। আগামী মাস থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডেটা বেইসে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ হবে বয়সভেদে পাঁচ ও ১০ বছর। ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না। তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা নবায়ন করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুনিম হাসান ভোরের কাগজকে বলেন, আগামী জুলাই থেকে যাতে নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। ফি নির্ধারণ কমিটি ৪৮ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য সাড়ে তিন হাজার (২১ দিন), জরুরি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা (সাত দিন) ও অতি জরুরি সাড়ে সাত হাজার (এক দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ বছরের সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার টাকা, জরুরি ৭ হাজার টাকা এবং অতি জরুরি ৯ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট প্রকল্প ৩ কোটি পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সে জন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হবে। পরবর্তী সময়ে ওই কারখানাতেই পাসপোর্ট ছাপা হবে। বর্তমানের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, তা ই-পাসপোর্টে থাকছে না। সেখানে থাকবে পলিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রসঙ্গত, অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ই-পাসপোর্টে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ থাকবে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি) তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। আর ই-পাসপোর্টের সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে পিকেডিতে (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি)। আন্তর্জাতিক এই তথ্যভাণ্ডার পরিচালনা করে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও)। ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই তথ্যভাণ্ডারে ঢুকে তথ্য যাচাই করতে পারবে। এর ফলে পাসপোর্ট নিয়ে জালিয়াতি কঠিন হবে। সে সুবাদে জনভোগান্তি কমবে।