২৭ নিহতের ২৫ জনই শিশু শিক্ষার্থী, চিকিৎসাধীন ৭৮ জন
স্কুলে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত
- আপডেট সময় : ১০:২৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
- / 209

নিহত ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জনই শিশু। বাকি দুজনের একজন বিমানটির পাইলট এবং অপরজন মাইলস্টোন স্কুলের একজন শিক্ষিকা।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় নিহতদের অধিকাংশই শিশু। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২৭ জন নিহতের মধ্যে ২৫ জনই স্কুলের শিক্ষার্থী। বাকি দুজনের একজন বিমানটির পাইলট এবং অপরজন মাইলস্টোন স্কুলের একজন শিক্ষিকা।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
চিকিৎসার সব রকমের প্রস্তুতি আছে জানিয়ে সায়েদুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জাতীয় বার্ন ইউনিটে ভর্তি দুজনকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, “গতকাল যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, এতে যারা অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন, তাদের নিয়ে আরও দুঃখের সঙ্গে আরও খবর শেয়ার করতে চাই। এখানে গতকাল রাতে আরও ৮ জনের মৃত্যুর পরে সংখ্যাটি দাঁড়িয়েছে ১০। এখানে ভর্তি আছেন ৪২ জন, সিএমএইচে ভর্তি আছেন ২৮ জন। সেখানে সর্বমোট মৃতদেহ ছিল ১৫ জনের।
“কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে একজন, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল থেকে যাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে- তাকে মৃতদেহ বলছেন না, সেটা দেহাবশেষ।”
“সেখান (সিএমএইচ) থেকে আট জনের মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে, যিনি পাইলট উনার মরদেহটি মর্গে আছে। ছয়টি মরদেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি।”
বিশেষ সহকারী সায়েদুর জানান, নিহতদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজে। সেখানে বর্তমানে দুজন আইসিইউতে আছেন। আর ইউনাইটেড হাসপাতালে একজনকে মৃত অবস্থায় নেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে ২০ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বার্ন ইনস্টিটিউট, সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ৭৮ জন চিকিৎসাধীন আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বার্নে যারা ভর্তি আছেন তাদের মধ্য বেশ কয়েকজন আইসিইউতে আছেন, আইসিউতে থাকা রোগীদের মধ্যে কয়েকজন ভেন্টিলেটরে আছেন। এইচডিইউতে থাকাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা খুবই খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।”
সায়েদুর রহমান বলেন, “আমাদের সিঙ্গাপুরের হাই কমিশনার সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে আছেন, আমাদের এই হাসপাতালের পরিচালক কেইস সামারি পাঠিয়েছেন, উনারা যদি মনে করেন কাউকে পাঠানোর দরকার, এই বিষয়গুলো উনাদের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সোমবার দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। সে সময় ভবনটিতে ক্লাস চলছিল। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিমান এবং স্কুল ভবনে আগুন ধরে যায়।
তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট উদ্ধার অভিযানে নামে। পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবিও যোগ দেয় উদ্ধারকাজে। গুরুতর আহতদের হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস ১৯টি মরদেহ উদ্ধারের কথা জানায়। পরে সন্ধ্যায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাইলটসহ ২০ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে। পরে এই সংখ্যা ২৭ বলে জানানো হয়।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এখনও ছয়জনের মরদেহ শনাক্ত হয়নি। উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে একজনের দেহাবশেষ রয়েছে, যা শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে।


















