ঢাকা ০৩:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা

১০ মাসে ১১তম দেশ সফরে প্রধান উপদেষ্টা, যুক্তরাজ্যে কেনো যাচ্ছেন?

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:৩১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
  • / 303
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসে একাদশ বিদেশ সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে তিনি কিং চার্লসের হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন।

সরকার আশা করছে, সফরকালে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

বুধবার (৪ জুন ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এই সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।

এই সফরে কোনো সমঝোতা স্মারক সই হবে না। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গেও কোনো আলোচনার পরিকল্পনা নেই।

তবুও, ইউরোপে প্রধান উপদেষ্টার প্রথম সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ভারপ্রাপ্ত সচিবের মতে, এই সফরের মাধ্যমে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতান্ত্রিক অগ্রগতি ও সুশাসনের প্রতিশ্রুতি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরা সম্ভব হবে।

নোবেল বিজয়ী ও বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার একটি ‘স্বতন্ত্র ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি’ রয়েছে বলে মন্তব্য করা হয় ব্রিফিংয়ে। বলা হয়, “তার মতো একজন ব্যক্তিত্বের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে যুক্তরাজ্য সফর বৈশ্বিক পরিসরে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় ও সমুজ্জ্বল করবে।”

স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক?

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব জানান, সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি অফ স্টেট ডেভিড ল্যামি, কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা এবং থিংক ট্যাংকের শীর্ষ ব্যক্তি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।

ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, “সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করার বিষয়ে আলোচনা হবে। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি, জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়া, নতুন ব্রিটিশ বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গতিশীল করার ক্ষেত্রে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়, তথ্যপ্রযুক্তি, সামাজিক উদ্ভাবন, মানবাধিকার, অভিবাসন, জ্বালানি এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হবে।”

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে যুক্তরাজ্যের সহায়তা ও প্রযুক্তি বিনিময়ের বিষয়গুলোও এই সফরের অগ্রাধিকার থাকবে।”

প্রধান উপদেষ্টা ১১ জুন লন্ডনের থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউসে একটি বিশেষ আলোচনায় অংশ নেবেন।

কিং চার্লসের হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মানুষের, প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যে সমন্বয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন এবং শান্তিপূর্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ার প্রচেষ্টায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস এ বছরের সম্মানজনক কিং চার্লসের হারমোনি অ্যাওয়ার্ডের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে মনোনীত করেছেন।

১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস্ প্যালেসে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা রাজা চার্লসের কাছ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “এটি কেবল প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও এক অসাধারণ গৌরব ও সম্মানের স্বীকৃতি। এই পুরস্কার বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও উজ্জ্বল ও দৃঢ় করবে।”

সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন, টেকসই সম্প্রদায় গঠন, বাস্তবধর্মী শিক্ষার মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও স্থাপত্যের লালন এবং সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যেই রাজা তৃতীয় চার্লস তথা তৎকালীন প্রিন্স অব ওয়েলস ১৯৯০ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন।

২০২৪ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়নে অবদানের জন্য ফাউন্ডেশন থেকে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুনকে এই সম্মানজনক পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

দ্য কিংস ফাউন্ডেশন তার ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১১ জুন সন্ধ্যায় এক বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করেছে, যেখানে প্রধান উপদেষ্টাও উপস্থিত থাকবেন।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে যুক্তরাজ্যের রাজার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে, রাজা চার্লসের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ এক সম্মানজনক কূটনৈতিক সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।”

পূর্ববর্তী সফরসমূহ

২০২৪ সালের ৮ আগস্ট সরকারে আসার পর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফর শুরু হয়।

নিউইয়র্ক সফরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রধান উপদেষ্টার দ্বিতীয় বিদেশ সফর ছিল আজারবাইজানের বাকুতে, যেখানে তিনি জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে যোগ দেন এবং বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ডি-৮ সম্মেলনে অংশ নিতে তিনি তৃতীয় সফরে মিশরের কায়রো যান। চতুর্থ সফর ছিল সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগদানের জন্য। পঞ্চম সফর ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে, ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে অংশগ্রহণের জন্য।

এরপর মার্চে বহুল আলোচিত চীন সফরে যান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়াসহ বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নিয়ে বেইজিং সফরে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এটি ছিল তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর।

চীন সফর শেষে বিম্সটেক সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ড যান তিনি। এপ্রিল মাসে আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে যান কাতারে এবং সেখান থেকে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যান ভ্যাটিকান সিটিতে।

সবশেষে, জাপানের টোকিওতে ৩০তম নিক্কেই ফোরাম ফিউচার অব এশিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার সর্বশেষ সফর সম্পন্ন হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

১০ মাসে ১১তম দেশ সফরে প্রধান উপদেষ্টা, যুক্তরাজ্যে কেনো যাচ্ছেন?

আপডেট সময় : ১০:৩১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসে একাদশ বিদেশ সফরে যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে তিনি কিং চার্লসের হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন।

সরকার আশা করছে, সফরকালে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

বুধবার (৪ জুন ২০২৫) এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী এই সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।

এই সফরে কোনো সমঝোতা স্মারক সই হবে না। যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গেও কোনো আলোচনার পরিকল্পনা নেই।

তবুও, ইউরোপে প্রধান উপদেষ্টার প্রথম সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ভারপ্রাপ্ত সচিবের মতে, এই সফরের মাধ্যমে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতান্ত্রিক অগ্রগতি ও সুশাসনের প্রতিশ্রুতি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরা সম্ভব হবে।

নোবেল বিজয়ী ও বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার একটি ‘স্বতন্ত্র ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি’ রয়েছে বলে মন্তব্য করা হয় ব্রিফিংয়ে। বলা হয়, “তার মতো একজন ব্যক্তিত্বের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে যুক্তরাজ্য সফর বৈশ্বিক পরিসরে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় ও সমুজ্জ্বল করবে।”

স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক?

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব জানান, সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়ক সেক্রেটারি অফ স্টেট ডেভিড ল্যামি, কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা এবং থিংক ট্যাংকের শীর্ষ ব্যক্তি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন।

ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, “সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করার বিষয়ে আলোচনা হবে। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি, জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়া, নতুন ব্রিটিশ বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গতিশীল করার ক্ষেত্রে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়, তথ্যপ্রযুক্তি, সামাজিক উদ্ভাবন, মানবাধিকার, অভিবাসন, জ্বালানি এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা হবে।”

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে যুক্তরাজ্যের সহায়তা ও প্রযুক্তি বিনিময়ের বিষয়গুলোও এই সফরের অগ্রাধিকার থাকবে।”

প্রধান উপদেষ্টা ১১ জুন লন্ডনের থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউসে একটি বিশেষ আলোচনায় অংশ নেবেন।

কিং চার্লসের হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মানুষের, প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যে সমন্বয়, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তন এবং শান্তিপূর্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ার প্রচেষ্টায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস এ বছরের সম্মানজনক কিং চার্লসের হারমোনি অ্যাওয়ার্ডের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে মনোনীত করেছেন।

১২ জুন লন্ডনের সেন্ট জেমস্ প্যালেসে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা রাজা চার্লসের কাছ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “এটি কেবল প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও এক অসাধারণ গৌরব ও সম্মানের স্বীকৃতি। এই পুরস্কার বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও উজ্জ্বল ও দৃঢ় করবে।”

সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন, টেকসই সম্প্রদায় গঠন, বাস্তবধর্মী শিক্ষার মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও স্থাপত্যের লালন এবং সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যেই রাজা তৃতীয় চার্লস তথা তৎকালীন প্রিন্স অব ওয়েলস ১৯৯০ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন।

২০২৪ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়নে অবদানের জন্য ফাউন্ডেশন থেকে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুনকে এই সম্মানজনক পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

দ্য কিংস ফাউন্ডেশন তার ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১১ জুন সন্ধ্যায় এক বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করেছে, যেখানে প্রধান উপদেষ্টাও উপস্থিত থাকবেন।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে যুক্তরাজ্যের রাজার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে, রাজা চার্লসের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ এক সম্মানজনক কূটনৈতিক সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।”

পূর্ববর্তী সফরসমূহ

২০২৪ সালের ৮ আগস্ট সরকারে আসার পর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফর শুরু হয়।

নিউইয়র্ক সফরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রধান উপদেষ্টার দ্বিতীয় বিদেশ সফর ছিল আজারবাইজানের বাকুতে, যেখানে তিনি জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে যোগ দেন এবং বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ডি-৮ সম্মেলনে অংশ নিতে তিনি তৃতীয় সফরে মিশরের কায়রো যান। চতুর্থ সফর ছিল সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগদানের জন্য। পঞ্চম সফর ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে, ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে অংশগ্রহণের জন্য।

এরপর মার্চে বহুল আলোচিত চীন সফরে যান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়াসহ বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নিয়ে বেইজিং সফরে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এটি ছিল তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর।

চীন সফর শেষে বিম্সটেক সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ড যান তিনি। এপ্রিল মাসে আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে যান কাতারে এবং সেখান থেকে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যান ভ্যাটিকান সিটিতে।

সবশেষে, জাপানের টোকিওতে ৩০তম নিক্কেই ফোরাম ফিউচার অব এশিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার সর্বশেষ সফর সম্পন্ন হয়েছে।