ঢাকা ০৬:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

হয়তো আমাকেও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে: অমর্ত্য সেন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৮:০৩:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / 178

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের প্রতি বাড়তে থাকা হয়রানি ও সীমান্তে ঠেলে দেওয়ার ঘটনাকে গভীর উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) কলকাতার এক আলোচনায় তিনি রসিকতার ছলে বলেন, “একটা সম্ভাবনা আছে, আমাকেও হয়তো বাংলাদেশে পাঠানো হবে, কারণ ঢাকায় আমার পূর্বপুরুষের বাড়ি আছে। তবে এটিকে আমি খুব বেশি আপত্তির বিষয়ও মনে করি না।”

অমর্ত্য সেনের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে। তিনি দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় অর্থনীতিবিদ।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে অনেককেই বাংলাদেশি সন্দেহে সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেন, “খবরের কাগজে পড়লাম, বাংলায় কথা বলার কারণে একজনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। তখন ভাবলাম, তাহলে ফরাসি ভাষায় কথা বলব। কিন্তু সমস্যা হলো, আমি তো ফরাসি জানিই না।”

বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের হয়রানির প্রসঙ্গ তুলেও তিনি ভারতীয় সমাজের বহুত্ববাদকে স্মরণ করান। তাঁর ভাষায়, “বাঙালি, পাঞ্জাবিসহ প্রতিটি সাংস্কৃতিক পরিচয়কে উদযাপন করার যথেষ্ট কারণ আছে। বাংলাভাষীরা কর্মক্ষেত্রে অবহেলার শিকার হচ্ছেন, অসম্মানিত হচ্ছেন। আমি বলব না যে বাঙালি সংস্কৃতিই সবার সেরা, কিন্তু আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে সম্মান জানানো জরুরি। যদি তা না হয়, তাহলে প্রতিবাদ করা উচিত।”

বাংলাভাষীদের সীমান্তে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে চলতি বছরের এপ্রিলের পর থেকে এ ধরনের ঘটনা বাড়তে শুরু করে। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান চালায়। এরপর গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাটে নারী ও শিশুসহ এক হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে আটক করা হয়।

এর পর থেকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাভাষীদের বিমানে সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সুযোগ বুঝে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার খবর শুধু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেই নয়, বরং বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

হয়তো আমাকেও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে: অমর্ত্য সেন

আপডেট সময় : ০৮:০৩:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের প্রতি বাড়তে থাকা হয়রানি ও সীমান্তে ঠেলে দেওয়ার ঘটনাকে গভীর উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) কলকাতার এক আলোচনায় তিনি রসিকতার ছলে বলেন, “একটা সম্ভাবনা আছে, আমাকেও হয়তো বাংলাদেশে পাঠানো হবে, কারণ ঢাকায় আমার পূর্বপুরুষের বাড়ি আছে। তবে এটিকে আমি খুব বেশি আপত্তির বিষয়ও মনে করি না।”

অমর্ত্য সেনের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে। তিনি দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় অর্থনীতিবিদ।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে অনেককেই বাংলাদেশি সন্দেহে সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেন, “খবরের কাগজে পড়লাম, বাংলায় কথা বলার কারণে একজনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। তখন ভাবলাম, তাহলে ফরাসি ভাষায় কথা বলব। কিন্তু সমস্যা হলো, আমি তো ফরাসি জানিই না।”

বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের হয়রানির প্রসঙ্গ তুলেও তিনি ভারতীয় সমাজের বহুত্ববাদকে স্মরণ করান। তাঁর ভাষায়, “বাঙালি, পাঞ্জাবিসহ প্রতিটি সাংস্কৃতিক পরিচয়কে উদযাপন করার যথেষ্ট কারণ আছে। বাংলাভাষীরা কর্মক্ষেত্রে অবহেলার শিকার হচ্ছেন, অসম্মানিত হচ্ছেন। আমি বলব না যে বাঙালি সংস্কৃতিই সবার সেরা, কিন্তু আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে সম্মান জানানো জরুরি। যদি তা না হয়, তাহলে প্রতিবাদ করা উচিত।”

বাংলাভাষীদের সীমান্তে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে চলতি বছরের এপ্রিলের পর থেকে এ ধরনের ঘটনা বাড়তে শুরু করে। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান চালায়। এরপর গুজরাটের আহমেদাবাদ ও সুরাটে নারী ও শিশুসহ এক হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে আটক করা হয়।

এর পর থেকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাভাষীদের বিমানে সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। সুযোগ বুঝে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার খবর শুধু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেই নয়, বরং বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।