মিজোরাম দিয়েই কি মিয়ানমারে ঢুকছে ‘পশ্চিমা যোদ্ধারা’?
- আপডেট সময় : ১০:৪৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫
- / 277

ভারত হয়ে মিয়ানমারে পশ্চিমাদের ‘ভাড়াটে যোদ্ধা’ ঢুকছে—মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা ১০ মার্চ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এমন মন্তব্য করেন।
ভারতীয় পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা সেদিন বলেন, “আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য আছে। ইউক্রেন যুদ্ধের অভিজ্ঞ কিছু যোদ্ধা ভারতের মিজোরাম হয়ে মিয়ানমারের চিন প্রদেশে ঢুকছে। “সেখানে গিয়ে তারা স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যারা জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “গত বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার পশ্চিমা মিজোরামে প্রবেশ করেছে। কিন্তু রাজধানী আইজলের রাস্তায় তেমন বিদেশি পর্যটক চোখে পড়ে না।”
হিন্দু পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ২১ এপ্রিল মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দায়িত্ব নেয় সিআইএসএফ।
এর আগে ১৭ ডিসেম্বর ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামকে নতুন করে ‘প্রটেক্টেড এরিয়া রেজিম’ ঘোষণা করে, যাতে এই অঞ্চলে বিদেশিদের গতিবিধির ওপর নজরদারি চালানো যায়।
বিধানসভায় নিজের দাবির পক্ষে কিছু ঘটনার উল্লেখও করেন লালদুহোমা। তিনি বলেন, “গত বছরের ১৯ জুন মিজোরামের বিমানবন্দরে বিস্ফোরকসহ এক ব্রিটিশ নাগরিক গ্রেপ্তার হয়।”
তিনি মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়া আইজল সফর নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
কিন্তু চিন প্রদেশের বিদ্রোহীদের পক্ষে লালদুহোমা কেন এ ধরনের তথ্য দিলেন, তা স্পষ্ট নয়। অনেকে মনে করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন নিয়েই তিনি বিধানসভায় এ কথা বলেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিষয়টি খতিয়ে দেখে।
৬ এপ্রিল টাইমস অব ইন্ডিয়া এক সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ করে। শিরোনাম—‘মিজোরাম যেভাবে ভাড়াটে সৈনিকদের মিয়ানমারে ঢোকার প্রবেশপথ হয়ে দাঁড়িয়েছে’।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের চিন প্রদেশের অনেক বিদ্রোহীর সঙ্গে তারা কথা বলেছে। বিদ্রোহীরা স্বীকার করেছেন যে, তারা মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন।
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় বিদেশিদের চলাচলে নজরদারি জোরদার করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এর মধ্যেই গত মাসের শুরুতে মিজোরামে আটক হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই মার্কিন নাগরিক। তাদের লেংপুই বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের ধারণা, চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট গঠনের সময় এ দুজনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
মিজোরামের মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ৫১০ কিলোমিটার। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সীমান্তবর্তী এলাকায় অস্থিরতা চলছে। বহু মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরামের শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
মিজোরামের সংখ্যাগরিষ্ঠ মিজো, মণিপুরের কুকি-জোমিস, মিয়ানমারের চিন এবং বাংলাদেশের কুকি-চিন—সবাই জো জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।


















