ঢাকা ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

ভালোবাসি বেঁচে থাকা ভালোবাসি এই পৃথিবী

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:২০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল ২০২০
  • / 1119
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

আমরা একটা দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।এমন অভিজ্ঞতা এর আগে কোনোদিন হয়নি।কখনো হবে এমনটাও ভাবিনি কোনোদিন।কিন্তু হলো।আমরা ঘরবন্দি হলাম।টিভি খুললেই শুনতে পাই মৃত্যুর খবর।আমার খারাপ লাগে।কিন্তু সেটা খুবই ক্ষণস্থায়ী।অথচ খারাপ লাগাটা আরো গভীর হওয়া উচিত।আমার গভীর কিছু অনুভব হয়না।বরং প্রতিটা মৃত্যুই আমাকে ভীত করে।আমি ভয় পাই।নিজের মরণের ভয়।বাঁচতে চাই আরো অনেক দিন,বছর।আমার আবার আনন্দ ও হয়।ঘরবন্দী হওয়ার আনন্দ।

পুরো পৃথিবী জুড়ে যখন সকল মানুষ একইভাবে ঘরবন্দী হয়েছে ভাবি, তখন আমার অদ্ভুত আনন্দ হয়।ব্যবসায়ী,ব্যাংকার,শিক্ষক, উকিল সবাই নিয়মঘেরা জীবন ফেলে সময় কাটাচ্ছে তাদের পরিবারের সাথে।ঘুম থেকে উঠে অফিস যাওয়ার কোনো তাড়া নেই।যখন দেখি একেকজন ডাক্তার একেকজন যোদ্ধা হয়ে সমস্ত ভয় জয় করে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে,আমার প্রচন্ড আনন্দ হয়।যখন দেখি কিছু স্বেচ্ছাসেবক শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে ঘুরে মাইক হাতে নিয়ে সচেতন করে যাচ্ছে যেনো প্রতিটা প্রাণ নিরাপদে থাকে, আমার মনে হয় এমন আরো অনেক কিছু দেখবো বলেইতো বেঁচে থাকতে হবে।

এই সময়ে কষ্টটা হয়ে গেলো শুধু খেটে খাওয়া লোকদের।আমার তাঁদের জন্য কষ্ট হয়।কিন্তু সেটাও যে খুব গভীর তা কিন্তু নয়।গভীর হলে হয়তো এখন স্থির বসে থেকে ধৈর্য ধরে এই লিখাটা চালাতে পারতাম না।বহু বছরে মনের মধ্যে যে জং ধরেছে, যে যান্ত্রিক দূষণে দূষিত হয়ে আছে তা এতো সহজে মুছে কি করে!!তবে আমি বিশ্বাস করি এটাই সর্বোচ্চ সময় আমাদের খোলস ছেড়ে নতুন রুপে নিজেকে চেনার নিজেকে জানার।আমার এটা ভেবেই প্রচন্ড আনন্দ হয় যে এই দুঃসময়টা যদি আমরা কোনোমতে কাটিয়ে উঠতে পারি অনেকগুলো নতুন ‘মানুষের’ আবির্ভাব ঘটবে।জীবন এবং মরণের মাঝখানে থেকে যে জীবন একবার কেউ দেখে নেয় তার চোখেতো জীবনের মানেটাই বদলে যাবে।

গত ১৩ মার্চ থেকে আমার সর্দি, জ্বর,কাশি। এর মধ্যে নিজস্ব কিছু ব্যস্ততা ও ছিলো।১৮ তারিখ থেকে ফাইনালি বুঝতে পেরেছি আমি সত্যি অসুস্থ।নিজেই নিজেকে সচেতন করি।বার বার হাত ধুয়া,চেখে মুখে হাত না দেয়া মেনে চলার চেষ্টা করতে থাকি।তিনচারদিন বের হইনি কোথাও।ডাক্তার বন্ধুর পরামর্শে মেডিসিন নিয়ে যখন কিছুটা ভালো বাসায় চলে এলাম।রাস্তাঘাট নিরব নিস্তব্ধ দেখে জীবনটাকে অন্যরকম লাগতে লাগলো।কেনো জানিনা আমি অদ্ভুত এক শান্তি পাচ্ছি ভেতর ভেতর কিংবা আমার ভেতরটা একদম শান্ত হয়ে গেছে।

শুনেছি, সমুদ্রে ডলফিনদের দেখা গেছে,আকাশে নানান পাখির উড়াউড়ি চলে।আমার ভাল্লাগে।সত্যি ভাল্লাগে।মনে হয় অনেক কিছু করতে হবে।আমায় বাঁচিয়ে দাও আল্লাহ।আমি বাঁচতে চাই।এই পৃথিবীর উপর রহমতের দৃষ্টি দাও আল্লাহ।পৃথিবীকে সুস্থ করে দাও।হতেওতো পারে আমরা আর কখনো অসুস্থ ই না করলাম পৃথিবীটাকে।পৃথিবী সুন্দর,জীবন সুন্দর,তুমি সুন্দর, আমি সুন্দর,আমরা সুন্দর।ভালোবাসি বেঁচে থাকা,ভালোবাসি এই পৃথিবী।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঈশাখাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভালোবাসি বেঁচে থাকা ভালোবাসি এই পৃথিবী

আপডেট সময় : ০৫:২০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল ২০২০

 

আমরা একটা দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।এমন অভিজ্ঞতা এর আগে কোনোদিন হয়নি।কখনো হবে এমনটাও ভাবিনি কোনোদিন।কিন্তু হলো।আমরা ঘরবন্দি হলাম।টিভি খুললেই শুনতে পাই মৃত্যুর খবর।আমার খারাপ লাগে।কিন্তু সেটা খুবই ক্ষণস্থায়ী।অথচ খারাপ লাগাটা আরো গভীর হওয়া উচিত।আমার গভীর কিছু অনুভব হয়না।বরং প্রতিটা মৃত্যুই আমাকে ভীত করে।আমি ভয় পাই।নিজের মরণের ভয়।বাঁচতে চাই আরো অনেক দিন,বছর।আমার আবার আনন্দ ও হয়।ঘরবন্দী হওয়ার আনন্দ।

পুরো পৃথিবী জুড়ে যখন সকল মানুষ একইভাবে ঘরবন্দী হয়েছে ভাবি, তখন আমার অদ্ভুত আনন্দ হয়।ব্যবসায়ী,ব্যাংকার,শিক্ষক, উকিল সবাই নিয়মঘেরা জীবন ফেলে সময় কাটাচ্ছে তাদের পরিবারের সাথে।ঘুম থেকে উঠে অফিস যাওয়ার কোনো তাড়া নেই।যখন দেখি একেকজন ডাক্তার একেকজন যোদ্ধা হয়ে সমস্ত ভয় জয় করে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে,আমার প্রচন্ড আনন্দ হয়।যখন দেখি কিছু স্বেচ্ছাসেবক শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে ঘুরে মাইক হাতে নিয়ে সচেতন করে যাচ্ছে যেনো প্রতিটা প্রাণ নিরাপদে থাকে, আমার মনে হয় এমন আরো অনেক কিছু দেখবো বলেইতো বেঁচে থাকতে হবে।

এই সময়ে কষ্টটা হয়ে গেলো শুধু খেটে খাওয়া লোকদের।আমার তাঁদের জন্য কষ্ট হয়।কিন্তু সেটাও যে খুব গভীর তা কিন্তু নয়।গভীর হলে হয়তো এখন স্থির বসে থেকে ধৈর্য ধরে এই লিখাটা চালাতে পারতাম না।বহু বছরে মনের মধ্যে যে জং ধরেছে, যে যান্ত্রিক দূষণে দূষিত হয়ে আছে তা এতো সহজে মুছে কি করে!!তবে আমি বিশ্বাস করি এটাই সর্বোচ্চ সময় আমাদের খোলস ছেড়ে নতুন রুপে নিজেকে চেনার নিজেকে জানার।আমার এটা ভেবেই প্রচন্ড আনন্দ হয় যে এই দুঃসময়টা যদি আমরা কোনোমতে কাটিয়ে উঠতে পারি অনেকগুলো নতুন ‘মানুষের’ আবির্ভাব ঘটবে।জীবন এবং মরণের মাঝখানে থেকে যে জীবন একবার কেউ দেখে নেয় তার চোখেতো জীবনের মানেটাই বদলে যাবে।

গত ১৩ মার্চ থেকে আমার সর্দি, জ্বর,কাশি। এর মধ্যে নিজস্ব কিছু ব্যস্ততা ও ছিলো।১৮ তারিখ থেকে ফাইনালি বুঝতে পেরেছি আমি সত্যি অসুস্থ।নিজেই নিজেকে সচেতন করি।বার বার হাত ধুয়া,চেখে মুখে হাত না দেয়া মেনে চলার চেষ্টা করতে থাকি।তিনচারদিন বের হইনি কোথাও।ডাক্তার বন্ধুর পরামর্শে মেডিসিন নিয়ে যখন কিছুটা ভালো বাসায় চলে এলাম।রাস্তাঘাট নিরব নিস্তব্ধ দেখে জীবনটাকে অন্যরকম লাগতে লাগলো।কেনো জানিনা আমি অদ্ভুত এক শান্তি পাচ্ছি ভেতর ভেতর কিংবা আমার ভেতরটা একদম শান্ত হয়ে গেছে।

শুনেছি, সমুদ্রে ডলফিনদের দেখা গেছে,আকাশে নানান পাখির উড়াউড়ি চলে।আমার ভাল্লাগে।সত্যি ভাল্লাগে।মনে হয় অনেক কিছু করতে হবে।আমায় বাঁচিয়ে দাও আল্লাহ।আমি বাঁচতে চাই।এই পৃথিবীর উপর রহমতের দৃষ্টি দাও আল্লাহ।পৃথিবীকে সুস্থ করে দাও।হতেওতো পারে আমরা আর কখনো অসুস্থ ই না করলাম পৃথিবীটাকে।পৃথিবী সুন্দর,জীবন সুন্দর,তুমি সুন্দর, আমি সুন্দর,আমরা সুন্দর।ভালোবাসি বেঁচে থাকা,ভালোবাসি এই পৃথিবী।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঈশাখাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি