ঢাকা ০৪:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ সংশোধন, প্রবাসীদের কতটা সুবিধা হল? রূপসায় গুলিতে সৌদি প্রবাসী যুবক নিহত গণভোট প্রশ্নে বিএনপির প্রস্তাব ভুল, স্বীকার করলেন আমীর খসরু ‘আসন সমঝোতা’ জামায়াতের ‘গোপন’ কৌশল? ট্রাম্প বললেন, নিউইয়র্ক সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে, কমিউনিস্ট শহর হয়ে যাবে সৌদিতে সভা-সমাবেশে কঠোর ব্যবস্থা: সতর্কতা দূতাবাসের মামদানির জয়—ট্রাম্পের ক্ষমতা কি নড়বড়ে হচ্ছে? চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে গুলি বিএনপি প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সরোয়ার নিহত নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র মামদানি, ভাঙলেন সর্বকনিষ্ঠের রেকর্ড পিতৃপরিচয়ে ধানের শীষ পেলেন ২৪ জন, প্রথমবার নির্বাচনে ৮১ জন

বাজেটে সঞ্চয়কারীদের জন্য সুখবর : প্রথমবারের মতো আকার হ্রাসের নজির

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • / 292
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্যাংকে সঞ্চয় রাখা মানুষের জন্য নতুন বাজেটে এসেছে ভালো খবর। বর্তমানে ব্যাংকে বছরে একবার এক লাখ টাকার বেশি জমা পড়লে ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তিন লাখ টাকার কম জমার ক্ষেত্রে এ শুল্ক মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ, তিন লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেলে কেবল আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য হবে।

সোমবার বিকেলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের সময় এ তথ্য জানান।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি দিতে কতিপয় ক্ষেত্রে ভ্যাট ও আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এক লাখ টাকার পরিবর্তে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

এবারের বাজেটের আকারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রমী। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাসের নজির। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মাত্র অল্প কয়েক মাসে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে স্থিতিশীল করার কাজটি প্রায় সম্পন্ন করা গেলেও পরিপূর্ণ সাফল্যের জন্য এখনো অনেক দূর যেতে হবে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের প্রবণতা দেখা গেলেও তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত এপ্রিল মাসে মার্কিন প্রশাসনের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কের নেতিবাচক প্রভাবও আমাদের অর্থনীতিতে পড়তে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “এছাড়া, সম্প্রতি যে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করা হয়েছে, তার কোনো নেতিবাচক প্রভাব আপাতত বাজারে পড়ার সম্ভাবনা নেই, তবে এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এসব ঝুঁকি মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির জন্য বৈষম্যহীন ও টেকসই ভিত্তি নিশ্চিত করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা আপাতত প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানোর পরিবর্তে অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী করার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। এ শক্ত ভিতই হবে আগামীর বাংলাদেশের ভিত্তি। সেই বাংলাদেশে সবার জন্য মানসম্মত জীবন এবং বৈষম্যহীন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্য পূরণে আপনাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি। ইনশা আল্লাহ্‌, আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের সব মুক্তিকামী মানুষের জন্য এক অনুকরণীয় আলোকবর্তিকা।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বাজেটে সঞ্চয়কারীদের জন্য সুখবর : প্রথমবারের মতো আকার হ্রাসের নজির

আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

ব্যাংকে সঞ্চয় রাখা মানুষের জন্য নতুন বাজেটে এসেছে ভালো খবর। বর্তমানে ব্যাংকে বছরে একবার এক লাখ টাকার বেশি জমা পড়লে ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তিন লাখ টাকার কম জমার ক্ষেত্রে এ শুল্ক মওকুফের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ, তিন লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেলে কেবল আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য হবে।

সোমবার বিকেলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের সময় এ তথ্য জানান।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি দিতে কতিপয় ক্ষেত্রে ভ্যাট ও আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এক লাখ টাকার পরিবর্তে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

এবারের বাজেটের আকারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রমী। প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাসের নজির। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মাত্র অল্প কয়েক মাসে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে স্থিতিশীল করার কাজটি প্রায় সম্পন্ন করা গেলেও পরিপূর্ণ সাফল্যের জন্য এখনো অনেক দূর যেতে হবে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের প্রবণতা দেখা গেলেও তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত এপ্রিল মাসে মার্কিন প্রশাসনের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কের নেতিবাচক প্রভাবও আমাদের অর্থনীতিতে পড়তে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “এছাড়া, সম্প্রতি যে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করা হয়েছে, তার কোনো নেতিবাচক প্রভাব আপাতত বাজারে পড়ার সম্ভাবনা নেই, তবে এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এসব ঝুঁকি মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির জন্য বৈষম্যহীন ও টেকসই ভিত্তি নিশ্চিত করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা আপাতত প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানোর পরিবর্তে অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী করার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। এ শক্ত ভিতই হবে আগামীর বাংলাদেশের ভিত্তি। সেই বাংলাদেশে সবার জন্য মানসম্মত জীবন এবং বৈষম্যহীন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্য পূরণে আপনাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি। ইনশা আল্লাহ্‌, আমাদের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের সব মুক্তিকামী মানুষের জন্য এক অনুকরণীয় আলোকবর্তিকা।”