সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশসহ ৯ দেশের নাগরিকদের ভিজিট ও কর্মভিসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। তবে এ নিয়ে আমিরাত সরকারের কোনো সরকারি ওয়েবসাইটে তথ্য পাওয়া যায়নি। ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশ উগান্ডার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) ওরিয়েম হেনরি ওকেলো চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে উগান্ডার নাম অন্তর্ভুক্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব দেশের নাগরিকরা ভিসার আবেদন করতে পারবেন না। ভ্রমণ, কাজ বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আরব আমিরাতে প্রবেশে আগ্রহীদের ভিসা আবেদনও বাতিল করা হয়েছে।
ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ইউএইভিসাঅনলাইন ডট কম জানিয়েছে, আমিরাতের অভিবাসন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো হলো— বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া, লেবানন, ক্যামেরুন, সুদান ও উগান্ডা। তবে এই সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক কারণ জানায়নি আমিরাত সরকার।
ধারণা করা হচ্ছে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— জাল বা অবৈধ ভিসা ব্যবহার করে ইউএইতে প্রবেশ, ভুয়া পরিচয় বা পাসপোর্ট ব্যবহার, ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও অবস্থান, অপরাধমূলক রেকর্ড বা চলমান মামলা থাকা, বৈধ অনুমতি ছাড়া কাজ করা এবং কোভিড-১৯ সংক্রান্ত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়া।
এ নিষেধাজ্ঞা অস্থায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং আমিরাতের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুনর্বিবেচনা হতে পারে।
তবে যারা ইতিমধ্যে বৈধ ভিসা নিয়ে আমিরাতে বসবাস করছেন, তারা এ সিদ্ধান্তের বাইরে থাকছেন। যদিও এই বিধিনিষেধ প্রবাসীদের চাকরির আবেদন ও কাজের অনুমতি নবায়নে সমস্যা তৈরি করেছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের অনেক প্রবাসী এরই মধ্যে ভিসা জটিলতার মুখে পড়েছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ওপর আগে থেকেই আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর আছে।
উগান্ডার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সিনহুয়াকে টেলিফোনে বলেন, “উগান্ডার কিছু শ্রেণির নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে আমিরাত। এটি সামগ্রিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রদূতের তথ্যানুযায়ী, কোনো পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে উগান্ডার নাগরিকদের ওপর সীমিত বিধিনিষেধ থাকবে। দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেওয়া হবে না, শুধু স্বল্পমেয়াদি ভিসা দেওয়া হবে এবং কিছু শ্রেণির মানুষ ভিসা পাবেন না।”
ওরিয়েমের মতে, আমিরাত কর্তৃপক্ষ মূলত সেইসব ব্যক্তিদের লক্ষ্য করছে, যাদের ভিসার মেয়াদ শেষে দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম কিংবা যারা অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, “এটি মোটেও সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা নয়। কেউ কেউ যেতে পারবেন, তবে তা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ভিসা শেষে দেশে ফেরার প্রবণতা এবং ইউএই-এর আইন ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার ওপর।”
তিনি আরও জানান, “উগান্ডা সরকার এখনই এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আলোচনা শুরু করবে না। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হবে।”



















