পাকিস্তান–আফগানিস্তান উত্তেজনা : ৫৮ পাকিস্তানি সেনা হত্যার দাবি কাবুলের
- আপডেট সময় : ০৫:১৯:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
- / 144
আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তে শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের পর কাবুল দাবি করেছে, তাদের অভিযানে ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, ইসলামাবাদ জানিয়েছে, সংঘর্ষ চলাকালে তারা আফগান সীমান্তের ১৯টি ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে এ সংঘর্ষ হয়।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ–এর বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ রবিবার এক্সে একটি পোস্ট দেয়। তাতে বলা হয়, “পাকিস্তানের বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র আফগান বাহিনীর হাতে এসেছে।” অভিযানে ২০ জনের বেশি তালেবান সেনা হতাহত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়।
পাকিস্তান এখনো তালেবান সরকারের এই দাবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
আজ সকালে তালেবান কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কুনার ও হেলমান্দ প্রদেশের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে তিনটি ফাঁড়ি দখল করেছে।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এনায়েতুল্লাহ খোয়ারিজমি গত রাতে বলেন, “আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে বারবার পাকিস্তানের সীমালঙ্ঘন ও বিমান হামলার জবাবে তালেবান সফল প্রতিশোধমূলক অভিযান চালিয়েছে।” তিনি এক্সে আরও জানান, অভিযানটি মধ্যরাতে শেষ হয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, দেশটির সেনারা ১৯টি আফগান সীমান্ত ফাঁড়ি দখল করেছেন। নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে বলা হয়, এসব ফাঁড়িতে থাকা আফগান যোদ্ধারা কেউ নিহত হয়েছেন, কেউ পালিয়েছেন।
পাকিস্তান টেলিভিশন (পিটিভি)–এর সম্প্রচারিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, কুররাম অঞ্চলের আফগান সীমান্ত ফাঁড়িগুলোয় আগুন জ্বলছে। সেখানে দাবি করা হয়, কয়েকজন আফগান সেনা আত্মসমর্পণ করেছেন।
একইভাবে, নিরাপত্তা–সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাতে রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, পাকিস্তানি বাহিনী তালেবানের মানোজবা ক্যাম্প ব্যাটালিয়ন সদর, জান্দুসার ফাঁড়ি, তুর্কমেনজাই ক্যাম্প ও খারচার ফোর্ট ধ্বংস করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমটি আরও বলেছে, সীমান্তের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটিতে পাকিস্তান ‘অত্যন্ত নিখুঁতভাবে’ হামলা চালাচ্ছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি অভিযোগ করেন, “আফগান বাহিনী বেসামরিক জনগণের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। আফগানিস্তান বিনা উসকানিতে এ হামলা করেছে।” তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানের সাহসী বাহিনী দ্রুত ও কার্যকরভাবে এর জবাব দিয়েছে। কোনো ধরনের উসকানি সহ্য করা হবে না।”
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলার দুই দিন পর এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। গত বৃহস্পতিবারের ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে তালেবান।
তবে ইসলামাবাদ ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি। বরং তারা অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)–এর যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে, যারা ভারতের সহযোগিতায় পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে।
নয়াদিল্লি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অপরদিকে তালেবান জানিয়েছে, “তারা তাদের ভূখণ্ড অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেয় না।”

















