নির্বাচনের ইঙ্গিত মিললেও সংশয় কাটছে না বিশ্লেষকদের
লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠক
- আপডেট সময় : ১০:২২:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
- / 224

সম্প্রতি লন্ডনে এক বৈঠকে মিলিত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক শেষে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। সেখানে তারেক রহমান আগামী বছরের রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দেন। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, তিনি ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন এবং সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে রমজানের আগের সপ্তাহেই নির্বাচন সম্ভব হতে পারে।
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের এই বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার কথা উঠে এলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা তাতে পুরোপুরি আস্থাবান নন। যদিও অনেকেই মনে করছেন, এ বৈঠকে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কিছুটা দূর হয়েছে, তবে তারা এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, এখনো নির্বাচনের দিনক্ষণ স্পষ্টভাবে নির্ধারিত হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানও সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে—এ বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তাদের মতে, সুষ্ঠু নির্বাচনের আগে সরকারের সামনে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করার চাপ রয়েছে। ছাত্র ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশাও পূরণ করতে হবে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘‘ইলেকশনের ধোঁয়াশা কাটেনি, সংকটও সেভাবে কাটেনি। লন্ডনে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে আইস ব্রেকিং হয়েছে মাত্র।’’
অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘‘৭ মাস বা ৮ মাস পর যে নির্বাচনটা হবে, সেই নির্বাচনটার এখনই ফেব্রুয়ারিতে তারিখ নির্ধারণ হয়ে গেল—এটা বলার মতো সময় এখনও আসেনি। উভয়পক্ষ চাচ্ছে, ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনটা করার।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সরকার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, কাঙ্ক্ষিত সংস্কার এবং আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করার দায় নিয়ে এগোচ্ছে। এসব পূরণ না হলে নির্বাচনের পথে আবারও বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘‘বিচারের যে প্রক্রিয়া চলছে, যে গতিতে চলছে, এতে কবে নাগাদ বিচার শেষ হবে তার কোনো ঠিক নেই। সংস্কার আর বিচার এই সরকারকে করতে হবে। এই দুটি না করতে পারলে আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। জনগণ এই নির্বাচন মেনে নেবে না।’’
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘‘নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার না করে কীভাবে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব সংস্কার, প্রস্তুতিসহ নানা বিষয় আছে। শুধু রাজনৈতিক সমঝোতাতেই এটি সম্ভব নয়।’’


















