ঢাকা ০৪:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ সংশোধন, প্রবাসীদের কতটা সুবিধা হল? রূপসায় গুলিতে সৌদি প্রবাসী যুবক নিহত গণভোট প্রশ্নে বিএনপির প্রস্তাব ভুল, স্বীকার করলেন আমীর খসরু ‘আসন সমঝোতা’ জামায়াতের ‘গোপন’ কৌশল? ট্রাম্প বললেন, নিউইয়র্ক সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে, কমিউনিস্ট শহর হয়ে যাবে সৌদিতে সভা-সমাবেশে কঠোর ব্যবস্থা: সতর্কতা দূতাবাসের মামদানির জয়—ট্রাম্পের ক্ষমতা কি নড়বড়ে হচ্ছে? চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে গুলি বিএনপি প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সরোয়ার নিহত নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র মামদানি, ভাঙলেন সর্বকনিষ্ঠের রেকর্ড পিতৃপরিচয়ে ধানের শীষ পেলেন ২৪ জন, প্রথমবার নির্বাচনে ৮১ জন

দুদকের মামলায় জুবাইদার সঙ্গে তারেকও খালাস, বাতিল হলো সাজার রায়

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৬:১১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • / 287
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অবৈধ সম্পদের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে দেওয়া সাজা বাতিল করে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (২৮ মে ২০২৫) বিচারপতি খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চে জুবাইদা রহমানের করা আপিল গ্রহণ করে এই রায় দেন। এর আগে জজ আদালত এই মামলায় তারেক রহমানকে নয় বছর এবং জুবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন।

আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন, “জুবাইদা রহমানকে নোটিশ না দিয়েই মামলা দায়ের করেছিল দুদক, যা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হয়নি।” হাইকোর্ট মামলাটিকে শুরু থেকে ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, যেহেতু পুরো প্রক্রিয়াটি আইনসম্মত ছিল না, তাই আপিল না করলেও তারেক রহমানের সাজার রায় বাতিল করে তাকেও খালাস দেওয়া হয়েছে।

এর ফলে আওয়ামী লীগ আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া সব মামলায় তিনি খালাস পেলেন।

২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান লন্ডন যান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জায়মা রহমান। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তারা আর দেশে ফেরেননি।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েকটি মামলায় তারেক রহমান ও খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দেয় আদালত। একই বছরের ২ অক্টোবর জুবাইদার দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

সেই আদেশে বলা হয়েছিল, “সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ এবং আপিল দায়েরের শর্তে দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হলো।”

১৭ বছর পর, গত ৬ মে শাশুড়ির সঙ্গে লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। পরে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আপিল করেন।

মামলার এজাহার, চার্জশিট, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও রায় পর্যালোচনা করে ২২ মে থেকে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে জুবাইদার সঙ্গে তারেক রহমানেরও খালাস চান তাদের আইনজীবীরা।

জুবাইদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুদক ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করে। আসামি করা হয় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান এবং তার মাকে সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে।

অভিযোগে বলা হয়, তারা ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জুবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে।

মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরই তারেক ও জুবাইদা পৃথক রিট করেন। ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ মামলার চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

পরে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান রায় দেন। এতে তারেক রহমানকে ৯ বছর এবং জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়।

জুবাইদা রহমান তার তিন বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট ১৪ মে সেই আপিল গ্রহণ করে এবং তাকে জামিন দেয়। এর আগের দিন আদালত ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করে ওই আপিলের অনুমতি দিয়েছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দুদকের মামলায় জুবাইদার সঙ্গে তারেকও খালাস, বাতিল হলো সাজার রায়

আপডেট সময় : ০৬:১১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অবৈধ সম্পদের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে দেওয়া সাজা বাতিল করে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (২৮ মে ২০২৫) বিচারপতি খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চে জুবাইদা রহমানের করা আপিল গ্রহণ করে এই রায় দেন। এর আগে জজ আদালত এই মামলায় তারেক রহমানকে নয় বছর এবং জুবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন।

আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন, “জুবাইদা রহমানকে নোটিশ না দিয়েই মামলা দায়ের করেছিল দুদক, যা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হয়নি।” হাইকোর্ট মামলাটিকে শুরু থেকে ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, যেহেতু পুরো প্রক্রিয়াটি আইনসম্মত ছিল না, তাই আপিল না করলেও তারেক রহমানের সাজার রায় বাতিল করে তাকেও খালাস দেওয়া হয়েছে।

এর ফলে আওয়ামী লীগ আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া সব মামলায় তিনি খালাস পেলেন।

২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান লন্ডন যান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জায়মা রহমান। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তারা আর দেশে ফেরেননি।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কয়েকটি মামলায় তারেক রহমান ও খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দেয় আদালত। একই বছরের ২ অক্টোবর জুবাইদার দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

সেই আদেশে বলা হয়েছিল, “সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ এবং আপিল দায়েরের শর্তে দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হলো।”

১৭ বছর পর, গত ৬ মে শাশুড়ির সঙ্গে লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। পরে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে আপিল করেন।

মামলার এজাহার, চার্জশিট, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও রায় পর্যালোচনা করে ২২ মে থেকে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে জুবাইদার সঙ্গে তারেক রহমানেরও খালাস চান তাদের আইনজীবীরা।

জুবাইদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুদক ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করে। আসামি করা হয় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান এবং তার মাকে সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে।

অভিযোগে বলা হয়, তারা ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জুবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে।

মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরই তারেক ও জুবাইদা পৃথক রিট করেন। ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ মামলার চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

পরে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান রায় দেন। এতে তারেক রহমানকে ৯ বছর এবং জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়।

জুবাইদা রহমান তার তিন বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট ১৪ মে সেই আপিল গ্রহণ করে এবং তাকে জামিন দেয়। এর আগের দিন আদালত ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করে ওই আপিলের অনুমতি দিয়েছিলেন।