দক্ষিণ ওয়েলসের রেস্তোরাঁয় ভুয়া হালাল মুরগির মাংস সরবরাহ: দুই বাংলাদেশি দণ্ডিত
- আপডেট সময় : ১১:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
- / 356

কার্ডিফের কিলক্রেডাউন হাউজের বাসিন্দা হেলিম মিয়া (৪৬), যিনি ইউনিভার্সাল ফুড হোলসেল লিমিটেডের মালিক ছিলেন, তাকে প্রতারণামূলক ব্যবসা ও দেউলিয়া অবস্থায় ব্যবসা চালানোর অপরাধে চার বছর আট মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
একই শহরের অপর বাসিন্দা নোয়াফ রহমান (৪৬) বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই নিজের দোষ স্বীকার করেন। তাকে দুই বছরের স্থগিত দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কার্ডিফ ও দ্য ভেইল শেয়ার্ড রেগুলেটরি সার্ভিসেস কর্তৃক পরিচালিত তদন্তে এই জালিয়াতির বিষয়টি উন্মোচিত হয়। অভিযানে তাদের গুদাম থেকে ২,৮৪০ কেজি হিমায়িত মাংস জব্দ করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যালেক্স গ্রিনউড মার্থার টিডভিল ক্রাউন কোর্টে বলেন, “পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে রেস্তোরাঁ ও টেকঅ্যাওয়ে’র গ্রাহকরা ভুয়া হালাল মাংস খেয়েছেন, যা এই দুই আসামির অপরাধমূলক কার্যক্রমের ফল।”
তদন্তে উঠে আসে, এই মাংসের উৎস নির্দিষ্ট করা যাচ্ছিল না, তারিখ জাল করা হতো, এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে অপর্যাপ্ত তাপমাত্রায় পরিবহন করা হতো দক্ষিণ ও পশ্চিম ওয়েলসজুড়ে।
আদালতে জানানো হয়, ব্যবসায়ীরা বিশ্বাস করতেন তারা বৈধ হালাল সরবরাহকারীদের কাছ থেকে মাংস নিচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে অনেক মাংস হালাল না হয়েও এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে যাতে তা হালাল রূপে বিক্রি করা যায়। এমনকি একই কাটার যন্ত্রে নন-হালাল মাংসও প্রস্তুত হতো।
এছাড়া কিছু সময় গুদামে হালাল মাংস আসেইনি, তবুও তারা সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিল, শুধুমাত্র ‘হালাল’ নামে প্রচার করে।
রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম “সংবেদনশীলতার” কারণে আদালতে প্রকাশ করা হয়নি।
বিচারক ভ্যানেসা ফ্রান্সিস বলেন, “এই দুইজন আসামির বেপরোয়া আচরণ ছিল এবং তারা সমানভাবে দায়ী।” তিনি আরও বলেন, “এই অপরাধের কারণে সমাজে যে ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণ করা কঠিন, এবং দীর্ঘ সময় ধরে নীতিমালার চরম লঙ্ঘন ঘটেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এটি ছিল একটি সম্ভাব্য বিপর্যয়, যা সৌভাগ্যক্রমে ঘটেনি। তবে আপনারা যে অস্বাস্থ্যকর মাংস বিতরণ করেছেন, তা থেকে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারত।”
বিচারক আরও মন্তব্য করেন, অভিযুক্তরা একাধিক কোম্পানি খুলে ‘কনফিউশনের জাল’ তৈরি করেছিল, যেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানদের সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়।
এই রায়কে অনেকেই ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী ভোক্তাদের জন্য এক চরম বিশ্বাসভঙ্গ এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকির উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।
সূত্র: বিবিসি





















