ঢাকা ০৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী! কাতারের রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে কাকরদিয়া–তেরাদল–আলিপুর এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের আত্নপ্রকাশ

ঢাকার হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর অস্বাভাবিক মৃত্যু

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১২:১৭:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • / 353
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে অসুস্থ ছেলে নাঈম হোসেনের চিকিৎসার উদ্দেশে ঢাকায় এসেছিলেন সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার। শনিবার (২৮ জুন) তাঁরা রাজধানীর মগবাজার এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। সেদিন রাতেই খাবার খাওয়ার পর তিনজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে এক আত্মীয়কে জানানো হয়। পরদিন রোববার দুপুরে তাঁদের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামের একজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধী নাঈমের চিকিৎসার জন্য পরিবারটি শনিবার ঢাকায় আসে। যদিও গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে, ঢাকার পোস্তগোলা এলাকায় মনির হোসেনের একটি পাঁচতলা বাড়িও রয়েছে, যার দেখভাল করেন রফিকুল ইসলাম। তিনিই মনিরদের সঙ্গে থেকে মগবাজারের ‘সুইট স্লিপ’ হোটেলে নিয়ে যান। পাশের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে এনে রাতের খাবার খেয়েছিলেন তাঁরা। এরপর রাতেই সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।

হোটেলের সহকারী ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেলে মনির হোসেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে হোটেলে ওঠেন। রফিকুল ইসলাম নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে হোটেল বুক করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সন্ধ্যায় একটি ব্যাগে খাবার নিয়ে হোটেলে প্রবেশ করেন রফিকুল, এরপর তিনি চলে যান। রাত আটটার দিকে মনির হোসেন নিচে নামেন এবং পরে পানি নিয়ে উপরে ফেরত যান।

আনোয়ারুল আরও জানান, অসুস্থ হলেও তাঁরা হোটেলের কাউকে কিছু জানাননি। বেলা ১১টার দিকে রফিকুল তাঁর মেয়েকে নিয়ে হোটেলে আসেন এবং প্রথমে স্বপ্না আক্তারকে পাশের আদ-দ্বীন হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর কিছু সময় পরে মনির হোসেনকেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কক্ষে থাকা রফিকুলের মেয়ের চিৎকার শুনে হোটেল কর্মচারীরা তাঁদের ছেলে নাঈমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে একই হাসপাতালে নেন।

আদ-দ্বীন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সেলিম হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। পরে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মনির হোসেনের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে। তাঁর বাবা সেরাজুল হক ব্যাপারী। মনিরের আরও দুই সন্তান রয়েছে। মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন স্বপ্না আক্তারের খালাতো ভাই দেলোয়ার হোসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।” তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

মনা থানার ওসি গোলাম ফারুক বলেন, “রাতে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে তিনজন খেয়েছিলেন। সেই খাবার খাওয়ার পর তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁরা এক আত্মীয়কে জানিয়েছিলেন, খাওয়ার পর বমি বমি লাগছে।”

ওসি আরও জানান, বিষয়টি তদন্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করছে। মৃতদের ভিসেরা পরীক্ষার মাধ্যমে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ঢাকার হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর অস্বাভাবিক মৃত্যু

আপডেট সময় : ১২:১৭:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে অসুস্থ ছেলে নাঈম হোসেনের চিকিৎসার উদ্দেশে ঢাকায় এসেছিলেন সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী স্বপ্না আক্তার। শনিবার (২৮ জুন) তাঁরা রাজধানীর মগবাজার এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। সেদিন রাতেই খাবার খাওয়ার পর তিনজনই অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে এক আত্মীয়কে জানানো হয়। পরদিন রোববার দুপুরে তাঁদের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামের একজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধী নাঈমের চিকিৎসার জন্য পরিবারটি শনিবার ঢাকায় আসে। যদিও গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে, ঢাকার পোস্তগোলা এলাকায় মনির হোসেনের একটি পাঁচতলা বাড়িও রয়েছে, যার দেখভাল করেন রফিকুল ইসলাম। তিনিই মনিরদের সঙ্গে থেকে মগবাজারের ‘সুইট স্লিপ’ হোটেলে নিয়ে যান। পাশের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে এনে রাতের খাবার খেয়েছিলেন তাঁরা। এরপর রাতেই সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।

হোটেলের সহকারী ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকেলে মনির হোসেন তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে হোটেলে ওঠেন। রফিকুল ইসলাম নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে হোটেল বুক করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সন্ধ্যায় একটি ব্যাগে খাবার নিয়ে হোটেলে প্রবেশ করেন রফিকুল, এরপর তিনি চলে যান। রাত আটটার দিকে মনির হোসেন নিচে নামেন এবং পরে পানি নিয়ে উপরে ফেরত যান।

আনোয়ারুল আরও জানান, অসুস্থ হলেও তাঁরা হোটেলের কাউকে কিছু জানাননি। বেলা ১১টার দিকে রফিকুল তাঁর মেয়েকে নিয়ে হোটেলে আসেন এবং প্রথমে স্বপ্না আক্তারকে পাশের আদ-দ্বীন হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর কিছু সময় পরে মনির হোসেনকেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কক্ষে থাকা রফিকুলের মেয়ের চিৎকার শুনে হোটেল কর্মচারীরা তাঁদের ছেলে নাঈমকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে একই হাসপাতালে নেন।

আদ-দ্বীন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক সেলিম হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। পরে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মনির হোসেনের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে। তাঁর বাবা সেরাজুল হক ব্যাপারী। মনিরের আরও দুই সন্তান রয়েছে। মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন স্বপ্না আক্তারের খালাতো ভাই দেলোয়ার হোসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।” তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

মনা থানার ওসি গোলাম ফারুক বলেন, “রাতে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে তিনজন খেয়েছিলেন। সেই খাবার খাওয়ার পর তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁরা এক আত্মীয়কে জানিয়েছিলেন, খাওয়ার পর বমি বমি লাগছে।”

ওসি আরও জানান, বিষয়টি তদন্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করছে। মৃতদের ভিসেরা পরীক্ষার মাধ্যমে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।