চলে গেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা আল্লামা:মিশিগানে দাফন সম্পন্ন
- আপডেট সময় : ০৬:১৭:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০
- / 1004
বাঙালি জাতির শ্রেষ্ট সন্তান, যুদ্ধাহত মুক্তিযাদ্ধা, সদা হাস্যজ্জল জনাব মোস্তফা আল্লামা আর নেই।গত শুক্র কিংবা শনিবার কোন এক সময় তিনি নিঃসঙ্গ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে মারা যান। তাঁর দেশের বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের দেউলগ্রামে। তিনি ১৯৬৪ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন , ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধসহ প্রত্যেকটি আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর একান্ত প্রিয় মানুষ ছিলেন। ১৯৬৪ সাল থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একনিষ্ট সহচর, ফটোগ্রাফার এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতাত্তোর বঙ্গবন্ধুর প্রেস সেক্রেটারি ছিলেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধের সর্বাধিনাক এমএজি ওসমানীর জনসংযোগ অফিসার ও প্রেস সেক্রেটারি (মেজর পদমর্দা সম্পন্ন ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন “জন্মভূমি” পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল এমএ জি ওসমানীর সাথে সিলেটে পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে যোগদানে যাওয়ার সময় সিলেটের আকাশে হেলিকপ্টারে মোস্তফা আল্লামা গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। সদালাপী, অকুতোভয় সাহসী মোস্তফা আল্লামা মুক্তিযুদ্ধের পুর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনসংযোগ ও প্রচার সচিব এবং সাধীনতার পরে বিশেষ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে ইংল্যান্ডে অনুষ্টিত বিশ্ব যুব কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে ডেপুটি লিডার ছিলেন। তিনি সরকারী বেসরকারিভাবে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশ সফর করেন।
মোস্তফা আল্লামা একজন ক্রীড়ানুরাগী ব্যক্তি ছিলেন। ঢাকা আবাহনী স্পোটিং ক্লাবের সভাপতি হিসেবে ৪ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা ইনডোর স্টেডিয়ামে মোস্তফা আল্লামা ফুটবল টুর্নামেন্ট বহুল পরিচিত ছিলো। গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিনে তিনি মোস্তফা আল্লামা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করেন। যা দীর্ঘদিন সুনামের সাথে চলছিলো।
১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি ওসমানি স্মৃতিপরিষদ গঠন করেন।বর্তমানে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্টের মিশিগান রাজ্যে ডিট্রয়েট সিটিতে বসবাস করছিলেন।দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও আন্চলিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। মিশিগান হেমট্রামিক সিটির “আল মামুর” জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বরত ছিলেন।
গত প্রায় দুইদিন থেকে আত্বীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব ফোনে মোস্তফা আল্লামার সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে,শনি বার তাঁর বাসায় এসে ডাকাডাকি করি কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। রাতে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঁঙ্গে, দেখে তিনি মাটিতে পড়ে আছেন। পুলিশ প্রয়োজনীয় পরিক্ষা নিরিক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষনা করে। উল্লেখ্য তিনি একা একটি বাড়িতে থাকতেন।
১লা নভেম্বর রবিবার ডিট্রয়েট সিটির মসজিদুন নুর জামে মসজিদে জানাজা শেষে সোমবার ডিয়ারবন গুরুস্হানে তাঁকে দাফন করা হয়।
তাঁর মৃত্যুতে বাঙালী কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্হানিয় নেতৃবৃন্দ এবং সকল সংগঠন তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।
মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল একাত্তর বৎসর।



















