ঢাকা ০১:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না

গোপালগঞ্জে হামলা ও প্রতিরোধের মুখে এনসিপির সমাবেশ
মঞ্চে হামলা, বোমাবাজি, পুলিশের গাড়িতে আগুন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
  • / 241
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশস্থলে হামলা ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। সমাবেশস্থল ছাড়াও আরো কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে এনসিপির নেতাকর্মীরা। সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। হামলার পর সমাবেশ শেষ করে এনসিপির নেতাদের গাড়িবহর চলে যাওয়ার সময়ও স্থানীয়দের হামলার মুখে পড়ে।

বুধবার (১৬ জুলাই) বেলা দেড়টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালায় বলে এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ।

এ সময় সেখানে কয়েকটি ককটেল ফাটানো হয় এবং সাউন্ড বক্স, মাইক, চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ হামলাকারীদের বাধা দেওয়ার কোনো চেষ্টা করেনি বলেও এনসিপির অভিযোগ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলা যখন হয়, তখন বৃষ্টি চলছিল। সমাবেশমঞ্চে ছিলেন এনসিপির স্থানীয় নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছালেই পুরোদমে সমাবেশের কার্যক্রম শুরুর জন্য তারা অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় খাল পার হয়ে এসে লাঠিসোঁটা নিয়ে পৌরপার্কে সমাবেশস্থলে ঢুকে পড়েন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দুই থেকে তিনশন নেতাকর্মী। তারা বোমাবাজি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন একং সমাবেশ মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে চেয়ার ও মাইক ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। হঠাৎ আক্রমণে হতচকিত এনসিপি কর্মীরাও দৌড়ে সরে যান।

তবে অল্প সময়ের মধ্যে তারা সামলে উঠে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানও ঘটনাস্থলে আসেন।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বেলা ২টার পরপরই সমাবেশস্থলে পৌঁছান। এরপর পুরোদমে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়।

অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে বুধবার গোপালগঞ্জে সমাবেশ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া। সারা দেশে কর্মসূচির নাম ‘জুলাই পদযাত্রা’ হলেও গোপালগঞ্জের কর্মসূচির নামকরণ করা হয় ‘মার্চ টু গোপালগঞ’। এনসিপির নেতারা ফেসবুকে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সমাবেশকে ঘিরে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাত থেকে উত্তেজনা তৈরি হয়।

এদিকে, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহর গোপালগঞ্জে পৌঁছানোর আগে সকালে সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় ও ভাঙচুর করে। এ সময় সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য মারধরের শিকার হয় বলে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান জানান।

এরপর বেলা ১১টার দিকে টেকেরহাট সড়কের কংশুর এলাকায় সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসানের গাড়িতেও হামলা হয়। এ সময় গাড়িচালক মইন আহত হন।

এর আগে সকালে সদর উপজেলার গান্ধীয়াশুর এলাকায় ঘোনাপাড়া-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সমাবেশ শেষে গাড়িবহরে ফের হামলা
গোপালগঞ্জে দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুরের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি নেতারা সমাবেশ শেষ করে বের হয়ে যাওয়ার সময় আবারও হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। এনসিপি নেতারা গোপালগঞ্জে সমাবেশ শেষ করে টেকেরহাট হয়ে মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। হামলার মুখে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

অতর্কিত হামলার পর জেলা সার্কিট হাউজে আশ্রয় নেন নাহিদ, হাসনাত, সারজিসসহ এনসিপির নেতারা।

কোন সাহসে মুজিববাদীরা গোপালগঞ্জে আশ্রিত: নাহিদ
সমাবেশে ‘মুজিববাদীদের’ বাধার জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ বলেন, “মুজিববাদীরা আজকে বাধা দিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে আমরা বলেছিলাম, বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই, সেই লড়াইয়ে জিততে হবে। সেই লড়াইয়ে আমরা জিতেছিলাম। আজকে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। অচিরেই আমরা এর জবাব দেব ইনশাল্লাহ।”

নাহিদ বলেন, “যারা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে, নতুন বাংলাদেশের পক্ষে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এই গোপালগঞ্জ যেন আর মুজিববাদীদের কেন্দ্র হয়ে উঠতে না পারে। যদি পুলিশ দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়, নিজেদের জেলার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব, বাংলাদেশকে রক্ষা দায়িত্ব আমাদের নিজেদের নিতে হবে। যেমন আমরা গণঅভ্যুত্থানে নিয়েছিলাম।”

সমাবেশে নাহিদ বলেন, “আমরা নিশ্চিত করতে চাই, গোপালগঞ্জ নামের কারণে ভবিষ্যতের চাকরি ক্ষেত্রে বা অন্য কোনো স্থানে কেউ বৈষম্যের শিকার হবে না। কিন্তু গোপালগঞ্জে সন্ত্রাসীদের আস্তানা হতে আমরা দেব না। মুজিববাদীরা মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে, গোপালগঞ্জকেও কলুষিত করেছে। সেই গোপালগঞ্জকে আমরা উদ্ধার করব এবং সমুন্নত করব। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেক সম্পদ আওয়ামী দখল করেছে। তাদের সঙ্গে বেইনসাফ করেছে। আমরা নতুন বাংলাদেশে সকল ধর্মের অধিকার রক্ষা করব।”

এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আজকে মুজিববাদীরা বাধা দিয়েছে, তাদের জবাব দেওয়া হবে। আমরা ঘোষণা দিলে সারা বাংলাদেশ এই গোপালগঞ্জে এসে জড়ো হবে। কিন্তু আমরা সময় দিয়ে যাচ্ছি। আজকে যে হামলা হল, কোন সাহসে বাধা দেওয়া হয়েছে, কোন সাহসে মুজিববাদীরা গোপালগঞ্জে এখনও আশ্রিত হয়ে আছে, কারা আশ্রয় দিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি এর সামধান না হয় তাহলে আমরা আবারও আসব গোপালগঞ্জে। আমরা নিজ হাতে দায়িত্ব নিয়ে গোপালগঞ্জকে মুবিবাদীদের হাত থেকে মুক্ত করব ইনশাল্লাহ। মুজিববাদীদের কবর রচনা করে, বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনা করে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব এটা আমাদের আপনাদের কাছে ওয়াদা।”

এ সময় এনসিপি নেতারা, ‘ইনকিলাব-জিন্দাবাদ’, ‘মুজিববাদ-মুর্দাববাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গোপালগঞ্জে হামলা ও প্রতিরোধের মুখে এনসিপির সমাবেশ
মঞ্চে হামলা, বোমাবাজি, পুলিশের গাড়িতে আগুন

আপডেট সময় : ০৩:৫৫:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশস্থলে হামলা ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। সমাবেশস্থল ছাড়াও আরো কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে এনসিপির নেতাকর্মীরা। সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। হামলার পর সমাবেশ শেষ করে এনসিপির নেতাদের গাড়িবহর চলে যাওয়ার সময়ও স্থানীয়দের হামলার মুখে পড়ে।

বুধবার (১৬ জুলাই) বেলা দেড়টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালায় বলে এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ।

এ সময় সেখানে কয়েকটি ককটেল ফাটানো হয় এবং সাউন্ড বক্স, মাইক, চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ হামলাকারীদের বাধা দেওয়ার কোনো চেষ্টা করেনি বলেও এনসিপির অভিযোগ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলা যখন হয়, তখন বৃষ্টি চলছিল। সমাবেশমঞ্চে ছিলেন এনসিপির স্থানীয় নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছালেই পুরোদমে সমাবেশের কার্যক্রম শুরুর জন্য তারা অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় খাল পার হয়ে এসে লাঠিসোঁটা নিয়ে পৌরপার্কে সমাবেশস্থলে ঢুকে পড়েন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দুই থেকে তিনশন নেতাকর্মী। তারা বোমাবাজি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন একং সমাবেশ মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে চেয়ার ও মাইক ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। হঠাৎ আক্রমণে হতচকিত এনসিপি কর্মীরাও দৌড়ে সরে যান।

তবে অল্প সময়ের মধ্যে তারা সামলে উঠে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানও ঘটনাস্থলে আসেন।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বেলা ২টার পরপরই সমাবেশস্থলে পৌঁছান। এরপর পুরোদমে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়।

অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে বুধবার গোপালগঞ্জে সমাবেশ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া। সারা দেশে কর্মসূচির নাম ‘জুলাই পদযাত্রা’ হলেও গোপালগঞ্জের কর্মসূচির নামকরণ করা হয় ‘মার্চ টু গোপালগঞ’। এনসিপির নেতারা ফেসবুকে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সমাবেশকে ঘিরে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাত থেকে উত্তেজনা তৈরি হয়।

এদিকে, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহর গোপালগঞ্জে পৌঁছানোর আগে সকালে সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেয় ও ভাঙচুর করে। এ সময় সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য মারধরের শিকার হয় বলে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান জানান।

এরপর বেলা ১১টার দিকে টেকেরহাট সড়কের কংশুর এলাকায় সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এম রকিবুল হাসানের গাড়িতেও হামলা হয়। এ সময় গাড়িচালক মইন আহত হন।

এর আগে সকালে সদর উপজেলার গান্ধীয়াশুর এলাকায় ঘোনাপাড়া-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কে গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সমাবেশ শেষে গাড়িবহরে ফের হামলা
গোপালগঞ্জে দফায় দফায় হামলা-ভাঙচুরের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি নেতারা সমাবেশ শেষ করে বের হয়ে যাওয়ার সময় আবারও হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। এনসিপি নেতারা গোপালগঞ্জে সমাবেশ শেষ করে টেকেরহাট হয়ে মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। হামলার মুখে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

অতর্কিত হামলার পর জেলা সার্কিট হাউজে আশ্রয় নেন নাহিদ, হাসনাত, সারজিসসহ এনসিপির নেতারা।

কোন সাহসে মুজিববাদীরা গোপালগঞ্জে আশ্রিত: নাহিদ
সমাবেশে ‘মুজিববাদীদের’ বাধার জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। নাহিদ বলেন, “মুজিববাদীরা আজকে বাধা দিয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে আমরা বলেছিলাম, বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই, সেই লড়াইয়ে জিততে হবে। সেই লড়াইয়ে আমরা জিতেছিলাম। আজকে আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। অচিরেই আমরা এর জবাব দেব ইনশাল্লাহ।”

নাহিদ বলেন, “যারা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে, নতুন বাংলাদেশের পক্ষে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এই গোপালগঞ্জ যেন আর মুজিববাদীদের কেন্দ্র হয়ে উঠতে না পারে। যদি পুলিশ দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়, নিজেদের জেলার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব, বাংলাদেশকে রক্ষা দায়িত্ব আমাদের নিজেদের নিতে হবে। যেমন আমরা গণঅভ্যুত্থানে নিয়েছিলাম।”

সমাবেশে নাহিদ বলেন, “আমরা নিশ্চিত করতে চাই, গোপালগঞ্জ নামের কারণে ভবিষ্যতের চাকরি ক্ষেত্রে বা অন্য কোনো স্থানে কেউ বৈষম্যের শিকার হবে না। কিন্তু গোপালগঞ্জে সন্ত্রাসীদের আস্তানা হতে আমরা দেব না। মুজিববাদীরা মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে, গোপালগঞ্জকেও কলুষিত করেছে। সেই গোপালগঞ্জকে আমরা উদ্ধার করব এবং সমুন্নত করব। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেক সম্পদ আওয়ামী দখল করেছে। তাদের সঙ্গে বেইনসাফ করেছে। আমরা নতুন বাংলাদেশে সকল ধর্মের অধিকার রক্ষা করব।”

এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “আজকে মুজিববাদীরা বাধা দিয়েছে, তাদের জবাব দেওয়া হবে। আমরা ঘোষণা দিলে সারা বাংলাদেশ এই গোপালগঞ্জে এসে জড়ো হবে। কিন্তু আমরা সময় দিয়ে যাচ্ছি। আজকে যে হামলা হল, কোন সাহসে বাধা দেওয়া হয়েছে, কোন সাহসে মুজিববাদীরা গোপালগঞ্জে এখনও আশ্রিত হয়ে আছে, কারা আশ্রয় দিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি এর সামধান না হয় তাহলে আমরা আবারও আসব গোপালগঞ্জে। আমরা নিজ হাতে দায়িত্ব নিয়ে গোপালগঞ্জকে মুবিবাদীদের হাত থেকে মুক্ত করব ইনশাল্লাহ। মুজিববাদীদের কবর রচনা করে, বাহাত্তরের সংবিধানের কবর রচনা করে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব এটা আমাদের আপনাদের কাছে ওয়াদা।”

এ সময় এনসিপি নেতারা, ‘ইনকিলাব-জিন্দাবাদ’, ‘মুজিববাদ-মুর্দাববাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।