ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে পারছেন, গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:১১:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 77

এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ব্রিফ করছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। একই সঙ্গে তিনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে ছড়ানো গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেন।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. জাহিদ জানান, বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ মেডিকেল টিম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিচালনা করছে।

তিনি জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়মিতভাবে চিকিৎসা প্রক্রিয়া তদারকি করছেন এবং দেশি–বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা দিচ্ছেন।

বিদেশে নেওয়ার সক্ষমতা সম্পর্কে তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে স্থানান্তরের মতো শারীরিক অবস্থায় আছেন কি না—মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তা পর্যবেক্ষণ করছেন। যুক্তরাজ্য থেকেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসে রোগীর অবস্থা মূল্যায়ন করবেন।

ডা. জাহিদ বলেন, যদি মেডিকেল বোর্ড মনে করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন এবং তিনি ‘ট্রান্সফারেবল’ অবস্থায় আছেন, তখন উপযুক্ত সময়ে তাকে বিদেশে নেওয়া হবে। সব প্রস্তুতি থাকলেও রোগীর বর্তমান অবস্থা ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত এখন সম্ভব নয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।

বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে তিনি জানান, দলের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, তথ্য প্রদানের জন্য দল নির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন করেছে—খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে ব্রিফ করবেন তিনি নিজে, আর অন্যান্য বিষয়ে ব্রিফ করবেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজবী। এর বাইরে কারও বক্তব্যে গুরুত্ব না দেওয়ার অনুরোধও করেন তিনি।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন। পরীক্ষা–নিরীক্ষায় তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে তাকে সিসিইউতে রেখে নিবিড় পরিচর্যা করা হচ্ছে।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি–বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, সোমবার রাত থেকে হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রধান ফটকের দুই পাশে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে, পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ভিড় নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের বরাতে জানা যায়, রাত ২টার দিকে ব্যারিকেড দেওয়া হয় এবং তারপর থেকে আশপাশে কেউ ভিড় জমাতে পারছে না।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, রোগীদের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করা ও খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার স্বার্থে এই অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে পারছেন, গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান

আপডেট সময় : ০১:১১:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। একই সঙ্গে তিনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে ছড়ানো গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেন।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. জাহিদ জানান, বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ মেডিকেল টিম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিচালনা করছে।

তিনি জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়মিতভাবে চিকিৎসা প্রক্রিয়া তদারকি করছেন এবং দেশি–বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা দিচ্ছেন।

বিদেশে নেওয়ার সক্ষমতা সম্পর্কে তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে স্থানান্তরের মতো শারীরিক অবস্থায় আছেন কি না—মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তা পর্যবেক্ষণ করছেন। যুক্তরাজ্য থেকেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসে রোগীর অবস্থা মূল্যায়ন করবেন।

ডা. জাহিদ বলেন, যদি মেডিকেল বোর্ড মনে করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন এবং তিনি ‘ট্রান্সফারেবল’ অবস্থায় আছেন, তখন উপযুক্ত সময়ে তাকে বিদেশে নেওয়া হবে। সব প্রস্তুতি থাকলেও রোগীর বর্তমান অবস্থা ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত এখন সম্ভব নয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন।

বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে তিনি জানান, দলের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, তথ্য প্রদানের জন্য দল নির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন করেছে—খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে ব্রিফ করবেন তিনি নিজে, আর অন্যান্য বিষয়ে ব্রিফ করবেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজবী। এর বাইরে কারও বক্তব্যে গুরুত্ব না দেওয়ার অনুরোধও করেন তিনি।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন। পরীক্ষা–নিরীক্ষায় তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে তাকে সিসিইউতে রেখে নিবিড় পরিচর্যা করা হচ্ছে।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি–বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, সোমবার রাত থেকে হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রধান ফটকের দুই পাশে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে, পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ভিড় নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের বরাতে জানা যায়, রাত ২টার দিকে ব্যারিকেড দেওয়া হয় এবং তারপর থেকে আশপাশে কেউ ভিড় জমাতে পারছে না।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, রোগীদের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করা ও খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার স্বার্থে এই অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।