ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

খামেনিকে হত্যার সুযোগ পায়নি ইসরায়েল

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • / 240
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধে শিয়া সম্প্রদায়ের কার্যত সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল তেল আবিব। এমনটাই জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।

বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাৎজ বলেন, “আমরা খামেনিকে নির্মূল করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোনো বাস্তব অভিযানগত সুযোগ ছিল না।”

কাৎজ দাবি করেন, খামেনি জানতেন যে তার ওপর হামলার পরিকল্পনা রয়েছে এবং তাই তিনি ‘অত্যন্ত গভীরে’ আত্মগোপনে চলে যান। এমনকি ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের আইআরজিসির নিহত কমান্ডারদের পরিবর্তে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাদের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তবে খামেনি যুদ্ধ চলাকালে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন এবং তার জেনারেলদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

কাৎজের এই মন্তব্যে পূর্ববর্তী গণমাধ্যমের প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করার ইঙ্গিত মিলেছে, যেখানে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছিল।

কাৎজ বলেন, “খামেনিকে হত্যার জন্য ইসরায়েলের যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হতো না।”

যুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বৃহস্পতিবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার প্রভাব ‘অতিরঞ্জিত’ করে প্রচার করছে।

‘পরমাণু কর্মসূচি চালালে আবার হামলা করবে ইসরায়েল’

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ইরান পারমাণবিক কর্মসূচিতে ফের ‘অগ্রগতি’ দেখালে ইসরায়েল আবার হামলা চালাবে এবং এর জন্য তাদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে সবুজ সংকেত আছে।

আপাতত এমন শঙ্কা নেই জানিয়ে তিনি এও বলেন, “আমি এমন কোনো পরিস্থিতি দেখছি না যেখানে ইরান এই হামলার পর পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারবে।”

দুইদেশেরই ‘বিজয়’ দাবি

১২ দিনের যুদ্ধে বিজ দাবি করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধের ফলাফল আরব দেশগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি ‘সুযোগের জানালা’ খুলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি এবং একটি বড় বিজয় অর্জন করেছি। এই বিজয় শান্তি চুক্তিগুলো নাটকীয়ভাবে বিস্তৃত করার পথ খুলে দিয়েছে।”

নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে ২০২০ সালের আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যার মাধ্যমে ইসরায়েল কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংঘর্ষ শেষ হয় এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে, যা আসে ইরানের পাল্টা হামলার পর। ইরান যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যেখানে মার্কিন সেনারা অবস্থান করছিল।

যুদ্ধ শেষে ইরানও নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেছে।

তারা বলছে, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য ছিল তেহরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করা, কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়েছে। ইরান দাবি করে, তাদের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে হামলা বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

খামেনিকে হত্যার সুযোগ পায়নি ইসরায়েল

আপডেট সময় : ১০:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধে শিয়া সম্প্রদায়ের কার্যত সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল তেল আবিব। এমনটাই জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।

বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাৎজ বলেন, “আমরা খামেনিকে নির্মূল করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু কোনো বাস্তব অভিযানগত সুযোগ ছিল না।”

কাৎজ দাবি করেন, খামেনি জানতেন যে তার ওপর হামলার পরিকল্পনা রয়েছে এবং তাই তিনি ‘অত্যন্ত গভীরে’ আত্মগোপনে চলে যান। এমনকি ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের আইআরজিসির নিহত কমান্ডারদের পরিবর্তে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাদের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তবে খামেনি যুদ্ধ চলাকালে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন এবং তার জেনারেলদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

কাৎজের এই মন্তব্যে পূর্ববর্তী গণমাধ্যমের প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করার ইঙ্গিত মিলেছে, যেখানে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছিল।

কাৎজ বলেন, “খামেনিকে হত্যার জন্য ইসরায়েলের যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হতো না।”

যুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বৃহস্পতিবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার প্রভাব ‘অতিরঞ্জিত’ করে প্রচার করছে।

‘পরমাণু কর্মসূচি চালালে আবার হামলা করবে ইসরায়েল’

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ইরান পারমাণবিক কর্মসূচিতে ফের ‘অগ্রগতি’ দেখালে ইসরায়েল আবার হামলা চালাবে এবং এর জন্য তাদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে সবুজ সংকেত আছে।

আপাতত এমন শঙ্কা নেই জানিয়ে তিনি এও বলেন, “আমি এমন কোনো পরিস্থিতি দেখছি না যেখানে ইরান এই হামলার পর পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারবে।”

দুইদেশেরই ‘বিজয়’ দাবি

১২ দিনের যুদ্ধে বিজ দাবি করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধের ফলাফল আরব দেশগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি ‘সুযোগের জানালা’ খুলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, “আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি এবং একটি বড় বিজয় অর্জন করেছি। এই বিজয় শান্তি চুক্তিগুলো নাটকীয়ভাবে বিস্তৃত করার পথ খুলে দিয়েছে।”

নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে ২০২০ সালের আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যার মাধ্যমে ইসরায়েল কয়েকটি আরব দেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংঘর্ষ শেষ হয় এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে, যা আসে ইরানের পাল্টা হামলার পর। ইরান যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যেখানে মার্কিন সেনারা অবস্থান করছিল।

যুদ্ধ শেষে ইরানও নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেছে।

তারা বলছে, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য ছিল তেহরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করা, কিন্তু সেটি ব্যর্থ হয়েছে। ইরান দাবি করে, তাদের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে হামলা বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে।