ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

কি যুক্তিতে টিউলিপের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলেন ইউনূস?

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৬:১৩:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • / 277
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ হচ্ছে না।

টিউলিপের আমন্ত্রণে ইউনূসের সঙ্গে তার এই সাক্ষাৎ না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকারপ্রধানের উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সাক্ষাৎ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা তো বলেছি, বিষয়টি আইনি। আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে।”

গত ৪ জুন বাংলাদেশে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ নিরসনের উদ্দেশ্যে মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক।

ওই চিঠিতে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ অথবা বিকেলে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ। প্রথমে মুহাম্মদ ইউনূস চিঠি পাননি বলে জানালেও, পরে ১১ জুন চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

মঙ্গলবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চিঠির জবাব দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়টি ‘আইনিভাবে সমাধান’ করা হবে।

দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের সময় সাক্ষাতের জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তিনি এই বৈঠকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ অবসান ঘটাতে চেয়েছেন।

এ সাক্ষাতে চলমান বিতর্ক নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিলেন বলেও জানা গেছে।

চিঠিতে টিউলিপ উল্লেখ করেন, তিনি আশা করেন, সম্ভাব্য বৈঠকটি ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের কারণে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সহায়ক হবে। তিনি আরও লেখেন, “আমার মায়ের বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার সম্পর্কের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করতে চাই।”

তিনি আরও লিখেছেন, “আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক, লন্ডনে জন্মেছি এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট এলাকার জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে আছি। বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। দেশটি আমার হৃদয়ের কাছের হলেও এটি আমার জন্মভূমি নয়, আমি সেখানে বসবাস করি না বা পেশাগত জীবনও গড়ে তুলি নি। আমি বিষয়টি পরিষ্কারভাবে দুদককে বোঝাতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা লন্ডনে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি এবং বারবার ঢাকার একটি এলোমেলো ঠিকানায় কাগজপত্র পাঠিয়ে যাচ্ছে।”

টিউলিপ আরও বলেন, “এই কল্পিত তদন্তের প্রতিটি ধাপ সংবাদমাধ্যমে জানানো হচ্ছে, অথচ আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। আমি নিশ্চিত, আপনি বুঝতে পারবেন—এ ধরনের প্রতিবেদন কীভাবে আমার দায়িত্ব পালন ও দেশের জন্য কাজ করতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।”

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার বোন শেখ রেহেনা এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের দাবি, টিউলিপ কিংবা তার মা ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাত হাজার ২০০ স্কয়ার ফুটের একটি প্লট নিয়েছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিউলিপ।

অন্যদিকে, টিউলিপের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন।

টিউলিপ দাবি করেছেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ নিয়ে তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।

এই বিতর্কের পর চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ইকনোমিক সেক্রেটারি ও সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। তবে, পরবর্তীকালে যুক্তরাজ্য সরকারের তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনীত কোনো অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কি যুক্তিতে টিউলিপের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলেন ইউনূস?

আপডেট সময় : ০৬:১৩:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ হচ্ছে না।

টিউলিপের আমন্ত্রণে ইউনূসের সঙ্গে তার এই সাক্ষাৎ না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সরকারপ্রধানের উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সাক্ষাৎ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা তো বলেছি, বিষয়টি আইনি। আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে।”

গত ৪ জুন বাংলাদেশে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ নিরসনের উদ্দেশ্যে মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক।

ওই চিঠিতে হাউস অব কমন্সে মধ্যাহ্নভোজ অথবা বিকেলে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ। প্রথমে মুহাম্মদ ইউনূস চিঠি পাননি বলে জানালেও, পরে ১১ জুন চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

মঙ্গলবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চিঠির জবাব দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়টি ‘আইনিভাবে সমাধান’ করা হবে।

দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের সময় সাক্ষাতের জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তিনি এই বৈঠকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ অবসান ঘটাতে চেয়েছেন।

এ সাক্ষাতে চলমান বিতর্ক নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিলেন বলেও জানা গেছে।

চিঠিতে টিউলিপ উল্লেখ করেন, তিনি আশা করেন, সম্ভাব্য বৈঠকটি ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের কারণে সৃষ্ট ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সহায়ক হবে। তিনি আরও লেখেন, “আমার মায়ের বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার সম্পর্কের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করতে চাই।”

তিনি আরও লিখেছেন, “আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক, লন্ডনে জন্মেছি এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট এলাকার জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে আছি। বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। দেশটি আমার হৃদয়ের কাছের হলেও এটি আমার জন্মভূমি নয়, আমি সেখানে বসবাস করি না বা পেশাগত জীবনও গড়ে তুলি নি। আমি বিষয়টি পরিষ্কারভাবে দুদককে বোঝাতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু তারা লন্ডনে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি এবং বারবার ঢাকার একটি এলোমেলো ঠিকানায় কাগজপত্র পাঠিয়ে যাচ্ছে।”

টিউলিপ আরও বলেন, “এই কল্পিত তদন্তের প্রতিটি ধাপ সংবাদমাধ্যমে জানানো হচ্ছে, অথচ আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। আমি নিশ্চিত, আপনি বুঝতে পারবেন—এ ধরনের প্রতিবেদন কীভাবে আমার দায়িত্ব পালন ও দেশের জন্য কাজ করতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।”

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার বোন শেখ রেহেনা এবং ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের দাবি, টিউলিপ কিংবা তার মা ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাত হাজার ২০০ স্কয়ার ফুটের একটি প্লট নিয়েছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিউলিপ।

অন্যদিকে, টিউলিপের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন।

টিউলিপ দাবি করেছেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ নিয়ে তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।

এই বিতর্কের পর চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ইকনোমিক সেক্রেটারি ও সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ। তবে, পরবর্তীকালে যুক্তরাজ্য সরকারের তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনীত কোনো অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি।