পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ‘সম্পূর্ণভাবে সুস্থ’ আছেন বলে জানিয়েছেন তার বোন উজমা খান।
রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে গিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি এ তথ্য জানান। তার মন্তব্যে ইমরান খানের স্বাস্থ্য নিয়ে চলা নানা গুঞ্জনেরও ইতি ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে কারা কর্তৃপক্ষ উজমাকে ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়। আদিয়ালা কারাগারের ভেতরে তিনি ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন। বাইরে সেই সময়ে অপেক্ষা করছিলেন বেশ কিছু পিটিআই সমর্থক।
পাকিস্তানের দৈনিক দ্য ডন জানায়, সাক্ষাৎ শেষে বাইরে এসে উজমা সাংবাদিকদের বলেন, “ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা একেবারে ভালো। তবে তিনি খুব রাগান্বিত ছিলেন। বললেন, তার ওপর মানসিক নির্যাতন হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, ইমরানকে সারাদিন সেলে আটকে রাখা হয় এবং খুব সামান্য সময়ের জন্যই বাইরে যেতে দেওয়া হয়। কারও সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই। দুই ভাইবোনের সাক্ষাৎও হয়েছে মাত্র আধঘণ্টা, তাও কঠোর নজরদারির মধ্যে। কোনো মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি ছিল না।
গণমাধ্যমকে আরেক মন্তব্যে উজমা বলেন, ভাইয়ের অবস্থা দেখে তিনি নিজেও ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হয়েছেন। ছোট একটি কক্ষে ইমরান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবির ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। চার সপ্তাহ ধরে কাউকেই তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, শারীরিক নির্যাতনের চেয়ে মানসিক নির্যাতনই বেশি।
ইমরানের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবিতে মঙ্গলবার ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডিতে বিক্ষোভের ডাক দেয় পিটিআই। দলটি ১৪৪ ধারা অমান্য করে বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নেয়।
তাদের অভিযোগ, কয়েক সপ্তাহ ধরে ইমরানের পরিবার ও নেতাদের তাকে দেখার অনুমতি দেওয়া হয়নি। খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহাইল আফ্রিদি জানান, ২৭ অক্টোবরের পর থেকে ইমরান বা বুশরা বিবির সঙ্গে কারও সাক্ষাৎ হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে ইমরানের শারীরিক অবস্থা ও অবস্থান নিয়ে পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়। তার স্বাস্থ্য নিয়ে নানা গুজব ছড়ায়—এমনকি তিনি জীবিত আছেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ইমরানের ছেলেরাও তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পিটিআই দাবি করে, গত মার্চে ইসলামাবাদ হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে সপ্তাহে দুদিন জেলে গিয়ে ইমরানের সঙ্গে দেখা করা যাবে। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না, আর আদালতও এ নিয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
অবশেষে কয়েক সপ্তাহের অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর মঙ্গলবার ইমরানের বোন উজমাকে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়। দলটি জানিয়েছে, ইসলামাবাদ হাই কোর্ট ও আদিয়ালা জেলের বাইরে বিক্ষোভের পরিকল্পনাও করা হয়েছিল।

















