ঢাকা ০৪:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না

ইউনূসেই আস্থা জামায়াতের, তবে…

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:০৭:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
  • / 285
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, সেনাবাহিনীকে কোনোভাবেই বিতর্কিত করা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পাঠাতে মানবিক করিডোর গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের নেওয়া উচিত। শনিবার (২৪ মে ২০২৫) রাজধানীর বড় মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার অধিবেশন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, “ইতিহাসের অনেক বাঁকে সেনাবাহিনীর মর্যাদাপূর্ণ অবদান রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সেনাবাহিনী গড়ে উঠেছে। কোনো কার্যক্রম বা কারও পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের এই গর্বের প্রতিষ্ঠান বিতর্কিত হোক, এটা আমরা চাই না। আমরা চাই, এই প্রতিষ্ঠান তার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকবে।”

সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চান বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াত আমির এই মন্তব্য করেন। বিএনপিও জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে তারা সরকারকে আর সহযোগিতা করবে না।

গত মঙ্গলবার সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরদিন অফিসার্স অ্যাড্রেসে তিনি ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পদত্যাগের কথা ভাবছেন বলে জানান। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়। ওই দিনই জামায়াত আমির সরকারকে সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের পরামর্শ দেন।

তবে ইউনূস কেন পদত্যাগ করতে চাইছেন, তা স্পষ্ট নয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনূস আক্ষেপ করেছেন যে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পাচ্ছেন না এবং বারবার বিরোধিতার মুখে পড়ছেন।

গত সাড়ে ৯ মাসে রাজনৈতিক দল বা সংগঠনগুলোর মধ্যে করিডোর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা ছাড়া সরকারের অন্য কোনো উদ্যোগের বিরোধিতা দেখা যায়নি। তবে এ বিষয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে জোরালো বক্তব্যও আসেনি।

নির্বাচিত সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত

রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে মানবিক করিডোর গঠনের বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, “এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত। এ বিষয়টি ভেবেচিন্তে আগাতে হবে, হুট করে কোনো কিছু করা যাবে না। এখন দেশে কোনো সংসদ নেই, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উপদেষ্টাদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দেশপ্রেমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকারের এ ব্যাপারে সংলাপে বসা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “বিষয়টি যেহেতু অনেক বড়, সেটাকে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। সেটাই উত্তম হবে।”

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, “আরও অংশজনের সঙ্গে আলাপ করে বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা উচিত।”

নির্বাচন নিয়ে বাধ্য করতে চাই না

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন জাতীয় নির্বাচন তিনি এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে করতে চান। আমরা বারবার বলেছি, তার এই কথার উপরে আমরা আস্থা রাখতে চাই। এছাড়া আমাদের বিবেচনায় নির্বাচনের সময় কী হতে পারে, সেটাও আমরা বলেছি। আমরা তাকে বাধ্য করতে চাই না।”

তিনি বলেন, “কারণ, তিনি (ইউনূস) তো সকলের সমর্থিত। আমরাই তো তাকে এ জায়গায় এনেছি। কিন্তু জোর করে নেননি। তিনি তো আমাদের প্রতিপক্ষ না। ইনি এখন সরকারের অভিভাবক। সকল রাজনৈতিক দল ও অংশীজন স্বেচ্ছায় আমরা তার উপরে সে দায়িত্ব অর্পণ করেছি।”

অর্থবহ সংলাপ প্রয়োজন

জামায়াত আমির বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে দেশে ঘটে যাওয়া অনেকগুলো ঘটনা, দেশবাসী ও প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের সবাইকে বিচলিত করে তুলেছে। আমরা বিচলিত না হলেও সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে এই পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী চুপ করে থাকতে পারে না।”

তিনি বলেন, “সংঘাত ও কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে দিয়ে জাতিকে আর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া সমীচীন হবে না। এমন পরিস্থিতির অবসান হওয়া উচিত। এ জন্য প্রয়োজন অর্থবহ সংলাপের। এ দায়িত্বটা মূলত বর্তমান সরকারকে নিতে হবে এবং তাদেরকেই সংলাপের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সমস্যা যত বড়ই হোক, আমরা এটা বিশ্বাস করি যে আলোচনার মধ্যে দিয়ে সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছা সম্ভব।”

জামায়াত আমির বলেছেন, তারা চান না প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করুন। যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে সংলাপেই সমাধান সম্ভব বলে তারা মনে করেন। প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজনের আহ্বান আবারও তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি সেই বৈঠকে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আশাবাদী, আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আলাদা রোডম্যাপ দাবি

নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য সরকারের কাছে তার দল দুটি রোডম্যাপ প্রত্যাশা করেছিল উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা বলেছিলাম সংস্কারের একটা রোডম্যাপ দেওয়া হোক যে, ‘এই মাসের ভেতরে সংস্কার সম্পন্ন হবে।’ এরপরেই তার পাশাপাশি নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ দেওয়া হোক। তাহলে জনগণের স্বস্তি এবং আস্থা তৈরি হবে।”

তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত দুটি রোডম্যাপের কোনোটাই জনগণের সামনে আসেনি। এখান থেকেও কিছু সন্দেহ ও সংশয় জন্ম নিয়েছে। সরকারকে অনুরোধ করব, যত শীঘ্র সম্ভব এ দুটি রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক।”

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘গুম, খুনে’ জড়িতদের বিচারের প্রক্রিয়া ‘দৃশ্যমান’ হওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেন জামায়াত আমির।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইউনূসেই আস্থা জামায়াতের, তবে…

আপডেট সময় : ০৩:০৭:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, সেনাবাহিনীকে কোনোভাবেই বিতর্কিত করা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পাঠাতে মানবিক করিডোর গঠনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের নেওয়া উচিত। শনিবার (২৪ মে ২০২৫) রাজধানীর বড় মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার অধিবেশন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, “ইতিহাসের অনেক বাঁকে সেনাবাহিনীর মর্যাদাপূর্ণ অবদান রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সেনাবাহিনী গড়ে উঠেছে। কোনো কার্যক্রম বা কারও পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের এই গর্বের প্রতিষ্ঠান বিতর্কিত হোক, এটা আমরা চাই না। আমরা চাই, এই প্রতিষ্ঠান তার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রেখে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকবে।”

সেনানিবাসে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চান বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াত আমির এই মন্তব্য করেন। বিএনপিও জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে তারা সরকারকে আর সহযোগিতা করবে না।

গত মঙ্গলবার সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরদিন অফিসার্স অ্যাড্রেসে তিনি ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বলে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পদত্যাগের কথা ভাবছেন বলে জানান। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়। ওই দিনই জামায়াত আমির সরকারকে সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের পরামর্শ দেন।

তবে ইউনূস কেন পদত্যাগ করতে চাইছেন, তা স্পষ্ট নয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনূস আক্ষেপ করেছেন যে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা পাচ্ছেন না এবং বারবার বিরোধিতার মুখে পড়ছেন।

গত সাড়ে ৯ মাসে রাজনৈতিক দল বা সংগঠনগুলোর মধ্যে করিডোর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা ছাড়া সরকারের অন্য কোনো উদ্যোগের বিরোধিতা দেখা যায়নি। তবে এ বিষয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে জোরালো বক্তব্যও আসেনি।

নির্বাচিত সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত

রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে মানবিক করিডোর গঠনের বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, “এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত। এ বিষয়টি ভেবেচিন্তে আগাতে হবে, হুট করে কোনো কিছু করা যাবে না। এখন দেশে কোনো সংসদ নেই, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উপদেষ্টাদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী দেশপ্রেমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরকারের এ ব্যাপারে সংলাপে বসা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “বিষয়টি যেহেতু অনেক বড়, সেটাকে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। সেটাই উত্তম হবে।”

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, “আরও অংশজনের সঙ্গে আলাপ করে বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসা উচিত।”

নির্বাচন নিয়ে বাধ্য করতে চাই না

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন জাতীয় নির্বাচন তিনি এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে করতে চান। আমরা বারবার বলেছি, তার এই কথার উপরে আমরা আস্থা রাখতে চাই। এছাড়া আমাদের বিবেচনায় নির্বাচনের সময় কী হতে পারে, সেটাও আমরা বলেছি। আমরা তাকে বাধ্য করতে চাই না।”

তিনি বলেন, “কারণ, তিনি (ইউনূস) তো সকলের সমর্থিত। আমরাই তো তাকে এ জায়গায় এনেছি। কিন্তু জোর করে নেননি। তিনি তো আমাদের প্রতিপক্ষ না। ইনি এখন সরকারের অভিভাবক। সকল রাজনৈতিক দল ও অংশীজন স্বেচ্ছায় আমরা তার উপরে সে দায়িত্ব অর্পণ করেছি।”

অর্থবহ সংলাপ প্রয়োজন

জামায়াত আমির বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে দেশে ঘটে যাওয়া অনেকগুলো ঘটনা, দেশবাসী ও প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের সবাইকে বিচলিত করে তুলেছে। আমরা বিচলিত না হলেও সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে এই পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী চুপ করে থাকতে পারে না।”

তিনি বলেন, “সংঘাত ও কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে দিয়ে জাতিকে আর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া সমীচীন হবে না। এমন পরিস্থিতির অবসান হওয়া উচিত। এ জন্য প্রয়োজন অর্থবহ সংলাপের। এ দায়িত্বটা মূলত বর্তমান সরকারকে নিতে হবে এবং তাদেরকেই সংলাপের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সমস্যা যত বড়ই হোক, আমরা এটা বিশ্বাস করি যে আলোচনার মধ্যে দিয়ে সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছা সম্ভব।”

জামায়াত আমির বলেছেন, তারা চান না প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করুন। যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে সংলাপেই সমাধান সম্ভব বলে তারা মনে করেন। প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজনের আহ্বান আবারও তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি সেই বৈঠকে ভালো কিছু বের হয়ে আসবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আশাবাদী, আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আলাদা রোডম্যাপ দাবি

নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য সরকারের কাছে তার দল দুটি রোডম্যাপ প্রত্যাশা করেছিল উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা বলেছিলাম সংস্কারের একটা রোডম্যাপ দেওয়া হোক যে, ‘এই মাসের ভেতরে সংস্কার সম্পন্ন হবে।’ এরপরেই তার পাশাপাশি নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ দেওয়া হোক। তাহলে জনগণের স্বস্তি এবং আস্থা তৈরি হবে।”

তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত দুটি রোডম্যাপের কোনোটাই জনগণের সামনে আসেনি। এখান থেকেও কিছু সন্দেহ ও সংশয় জন্ম নিয়েছে। সরকারকে অনুরোধ করব, যত শীঘ্র সম্ভব এ দুটি রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশ করা হোক।”

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘গুম, খুনে’ জড়িতদের বিচারের প্রক্রিয়া ‘দৃশ্যমান’ হওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেন জামায়াত আমির।