‘আল্পনা’ সিনেমা হলে ‘তাবলিগী মার্কাজ মসজিদ’ ব্যানার
- আপডেট সময় : ১২:৪৪:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 90
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ‘আল্পনা’ সিনেমা হল ভবনে ঝুলছে এখন ‘তাবলিগী মার্কাজ মসজিদ’ ব্যানার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাবলিগের ‘আলমী শুরায়ী নেজাম’-এর পক্ষে মাওলানা শহিদুল এই ভবনটি ইজারা নিয়ে দাওয়াতি কার্যক্রমের কেন্দ্র বা তাবলিগী মার্কাজ মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করছেন।
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশেদুজ্জামান বলেন, “২০ বছর আগে এখানে ‘আল্পনা’ সিনেমা হল ছিল। সেটি অনেক আগে বন্ধ হয়ে যায়। ভেস্টেড প্রপার্টি হিসেবে সরকারের কাছ থেকে কেউ এটি ইজারা নিয়ে পরিচালনা করতেন বলে জেনেছি।”
যে ভবনটিতে সিনেমা হল ছিল, সেটির সামনে এখনো একটি নামফলক রয়েছে। সেখানে লেখা আছে, ১৯৮৪ সালে ‘টাউন হল’ নামে এ ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক ম. শাফায়াত আলী। পরে ভবনটি সিনেমা হলে রূপ নেয়। স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই দশক ধরে ভবনটি খালি পড়ে আছে।
ভবনটি বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। একসময় সিনেমা হলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা দোকানপাটও উঠে গেছে। আশপাশে ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে, মানুষজনও খুব একটা চলাচল করে না এ পথে।
প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ এলাকায় সরকারের আধুনিক মডেল মসজিদের নির্মাণকাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্রুতই এর উদ্বোধন হবে, যেখানে নামাজের পাশাপাশি ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্রের ব্যবস্থা থাকবে।
‘সাথী ভাই’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. রায়হান শেখ বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ! কালিয়া নড়াইলের ‘আল্পনা’ সিনেমা হল এখন থেকে (বুধবার) মারকাজ মসজিদ। যেখানে একসময় গুনাহের অন্ধকার ছিল, আজ সেখানে আল্লাহর জিকির-ফিকির আর দ্বীনি দাওয়াতের আলো ছড়িয়ে পড়বে। অন্ধকার বিদায় নেবে, জায়গা নেবে ঈমানের নূর।”
তবে সমালোচনাও উঠেছে। সিপিবি নড়াইল জেলার সভাপতি জি এম বরকত উল্লাহ বলেন, “অবশ্যই মসজিদ হতে হবে। কিন্তু অধুনালুপ্ত সিনেমা হলে না করলেই ভালো হত। বিষয়টি দুঃখজনক। কাছাকাছি সরকারের আধুনিক মডেল মসজিদ তৈরি হচ্ছে, তাই এই জায়গাটি সংরক্ষণ করা যেত।”
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মোতালেবের মন্তব্য, “আরও অনেক জায়গা ছিল, সেখানে তাবলিগী মার্কাজ মসজিদ করলে ভালো হত।”
সুলতান মাহমুদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “ভবনটি তো অনেক পুরনো, হঠাৎ ভেঙে পড়বে না তো!”
নড়াইলের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আব্দুস সাত্তার বলেন, “আমার জানা মতে, নড়াইলে এখন আর কোনো সিনেমা হল নেই। সদরে ছিল ‘চিত্রাবাণী’, লোহাগড়ায় ‘সন্ধ্যা’ আর কালিয়ায় ছিল ‘আল্পনা’। সবই এখন অতীত।”

















