আবারও নরসিংদীর ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো বাংলাদেশ
- আপডেট সময় : ১১:০৯:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
- / 65
আবারও নরসিংদীর ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৬টা ১৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর। তিনি জানান, ভূমিকম্পের উৎস ছিল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে, নরসিংদীর শিবপুর এলাকায়। এটি ছিল হালকা মাত্রার কম্পন; রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। গত দুই সপ্তাহে আরও কয়েকবার অনুভূত ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী।
ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমসিএস) জানায়, নরসিংদী শহর থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে দেশে আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যার কেন্দ্র ছিল নরসিংদীর ঘোড়াশাল এলাকা। সেটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪।
এ ছাড়া গত সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়, যার কম্পন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলেও টের পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে হওয়া ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।
তারও আগে গত ২১ নভেম্বর কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানে বাংলাদেশে। ওই ঘটনায় তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের প্রাণহানি এবং ছয় শতাধিক মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে, আর কেন্দ্র ছিল ভূমির ১০ কিলোমিটার গভীরে।
পরদিন সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩.৩ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়। তার কিছু পরই সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে আরও দুটি ভূমিকম্প হয়—একটির কেন্দ্র ঢাকার বাড্ডা, আরেকটির নরসিংদী।
ক্রমাগত ভূমিকম্পের প্রেক্ষাপটে দ্রুত করণীয় ঠিক করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী গত ২১ নভেম্বর সতর্ক করে বলেন, “আজকের ভূমিকম্পটা বলা যেতে পারে ‘ফোরশক’। বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট যে ভূমিকম্প, এটা সেগুলোর একটি।”
ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার মনে করেন, বড় ধরনের একটি ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাংলাদেশের সামনে প্রকট হয়ে উঠেছে। জনগণের সচেতনতা ও সরকারের পরিকল্পনার ঘাটতির কারণে এই ঝুঁকি আরও বেড়েছে। তার ভাষ্য, ‘‘ভূমিকম্প ঠেকানো যাবে না, প্রতিরোধ করা সম্ভব না, আগাম সংকেতও দেওয়া যাবে না; কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব—যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। সব কথার শেষ কথা যেটা হচ্ছে, আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধ বা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা…।”
জনমনে বাড়তে থাকা ভূমিকম্প আতঙ্কের মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
















