ঢাকা ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি : ঢাকায় বাড়ছে নিরাপত্তা শঙ্কা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ আদালতপাড়ায় প্রকাশ্যে গুলি, হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে এসে খুন মামুন জাতীয় ঈদগাহ মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করল সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যালয়সহ ৩ স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ‘ব্রিটিশ-বাংলাদেশী হুজহু’র প্রকাশনা ও এওয়ার্ড অনুষ্ঠান ১৮ নভেম্বর লন্ডনে নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন জহির রায়হান–সুচন্দার ছেলে তপু রায়হান মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারী ধরতে সেনাবাহিনীর অভিযান! ঢাকার আকাশে বেলুন ‘ওড়ানোর পরিকল্পনা’, আওয়ামী লীগের ২৫ জন গ্রেপ্তার এবার শিক্ষকদের উপর জলকামানের সঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড

আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০১৯
  • / 1504
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে ১ জুলাই থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে। এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনে সময় ও ভোগান্তি কমবে আর ডিজিটাল দেশ গড়ার পথে একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

তথ্যমতে, আধুনিক বিশ্বে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় ই-পাসপোর্ট চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বাস্তবায়ন ব্যয় ধরে ২০১৭ সালে ই-পাসপোর্ট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেরিডোস জেএমবিএইচের সঙ্গে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বলা হয়েছিল, ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। এরপর বলা হয়, ২০১৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে চলতি মাসের ৩০ জুনের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে চলতি মাসেই ই-পাসপোর্টের সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। আগামী মাস থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডেটা বেইসে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ হবে বয়সভেদে পাঁচ ও ১০ বছর। ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না। তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা নবায়ন করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুনিম হাসান ভোরের কাগজকে বলেন, আগামী জুলাই থেকে যাতে নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। ফি নির্ধারণ কমিটি ৪৮ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য সাড়ে তিন হাজার (২১ দিন), জরুরি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা (সাত দিন) ও অতি জরুরি সাড়ে সাত হাজার (এক দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ বছরের সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার টাকা, জরুরি ৭ হাজার টাকা এবং অতি জরুরি ৯ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট প্রকল্প ৩ কোটি পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সে জন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হবে। পরবর্তী সময়ে ওই কারখানাতেই পাসপোর্ট ছাপা হবে। বর্তমানের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, তা ই-পাসপোর্টে থাকছে না। সেখানে থাকবে পলিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রসঙ্গত, অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ই-পাসপোর্টে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ থাকবে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি) তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। আর ই-পাসপোর্টের সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে পিকেডিতে (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি)। আন্তর্জাতিক এই তথ্যভাণ্ডার পরিচালনা করে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও)। ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই তথ্যভাণ্ডারে ঢুকে তথ্য যাচাই করতে পারবে। এর ফলে পাসপোর্ট নিয়ে জালিয়াতি কঠিন হবে। সে সুবাদে জনভোগান্তি কমবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট

আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০১৯

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আগামী মাসেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করে ১ জুলাই থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে। এর মাধ্যমে ইমিগ্রেশনে সময় ও ভোগান্তি কমবে আর ডিজিটাল দেশ গড়ার পথে একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

তথ্যমতে, আধুনিক বিশ্বে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বর্তমানে ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় ই-পাসপোর্ট চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বাস্তবায়ন ব্যয় ধরে ২০১৭ সালে ই-পাসপোর্ট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির সরকারি প্রতিষ্ঠান ভেরিডোস জেএমবিএইচের সঙ্গে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বলা হয়েছিল, ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। এরপর বলা হয়, ২০১৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু হবে। সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে চলতি মাসের ৩০ জুনের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে চলতি মাসেই ই-পাসপোর্টের সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। আগামী মাস থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডেটা বেইসে যেসব তথ্য আছে, তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ হবে বয়সভেদে পাঁচ ও ১০ বছর। ই-পাসপোর্ট চালু হলেও এমআরপি পাসপোর্ট বাতিল হবে না। তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা নবায়ন করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুনিম হাসান ভোরের কাগজকে বলেন, আগামী জুলাই থেকে যাতে নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। ফি নির্ধারণ কমিটি ৪৮ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য সাড়ে তিন হাজার (২১ দিন), জরুরি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা (সাত দিন) ও অতি জরুরি সাড়ে সাত হাজার (এক দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০ বছরের সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার টাকা, জরুরি ৭ হাজার টাকা এবং অতি জরুরি ৯ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট প্রকল্প ৩ কোটি পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সে জন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হবে। পরবর্তী সময়ে ওই কারখানাতেই পাসপোর্ট ছাপা হবে। বর্তমানের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুটি পাতা আছে, তা ই-পাসপোর্টে থাকছে না। সেখানে থাকবে পলিমারের তৈরি একটি কার্ড। এই কার্ডে সংরক্ষিত চিপে পাসপোর্ট বাহকের তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রসঙ্গত, অত্যাধুনিক বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ই-পাসপোর্টে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ থাকবে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের মণি) তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। আর ই-পাসপোর্টের সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে পিকেডিতে (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি)। আন্তর্জাতিক এই তথ্যভাণ্ডার পরিচালনা করে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও)। ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই তথ্যভাণ্ডারে ঢুকে তথ্য যাচাই করতে পারবে। এর ফলে পাসপোর্ট নিয়ে জালিয়াতি কঠিন হবে। সে সুবাদে জনভোগান্তি কমবে।