ঢাকা ০৮:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী! কাতারের রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে কাকরদিয়া–তেরাদল–আলিপুর এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের আত্নপ্রকাশ

আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি : ঢাকায় বাড়ছে নিরাপত্তা শঙ্কা

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:০৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • / 65

ঢাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ তৎরতা

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সম্ভাব্য নাশকতা ঠেকাতে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান, বাড়ানো হয়েছে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনাবাহিনীকে।

আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সম্ভাব্য দিন ঠিক করেছে। এ ঘটনাকে ঘিরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উত্তেজনা তৈরি ও সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলটির পলাতক নেতাকর্মীরা নানা উসকানি ও হুমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ডিএমপি সদরদপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেকোনও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে পুলিশ।

গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সময় রাজধানীতে মিছিল করলেও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। লকডাউন ঘোষণার পরও বিভিন্ন এলাকায় দলটির নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করেছে।

এদিকে, লকডাউন কর্মসূচির আগে সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তাই ১৩ নভেম্বর বড় ধরনের নাশকতার সম্ভাবনা কম মনে হলেও বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন

সোমবার (১০ নভেম্বর) ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর, বাংলামোটরসহ বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মেরুল বাড্ডা, শাহজাদপুর ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও নগরবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনাস্থলে তদন্ত চলছে এবং দায়ীদের শনাক্তে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, রাজধানীতে এক লাখ গ্যাস বেলুন উড়িয়ে রাজনৈতিক বার্তা ছড়ানোর পরিকল্পনার অভিযোগে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার (৯ নভেম্বর) ডিএমপি এ তথ্য জানায়।

তার আগের দিন শনিবার (৮ নভেম্বর) ডিএমপি সদর দফতরে জরুরি বৈঠকে ৫০ থানার ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়—যেকোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে ও গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার করতে। পরদিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সাত হাজার পুলিশ সদস্য টহল ও মহড়া শুরু করে। পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবিও প্রস্তুত রয়েছে সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতে।

ডিএমপি ও র‌্যাব সূত্র জানায়, ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকার প্রবেশপথ, হোটেল, মেস ও বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোতে বিশেষ তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার মনিটরিং, গ্রেপ্তার অভিযান ও টহল বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদরদপ্তর সব থানাকে নির্দেশ দিয়েছে—বিভিন্ন জেলা থেকে যেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানীতে ঢুকতে না পারে। এজন্য গণপরিবহন, রেল ও নৌপথেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গোষ্ঠী নাশকতার হুমকি দিচ্ছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে মাঠে আছি। কেউ যদি নাশকতার চেষ্টা করে, কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এমজেডএম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ‘১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে আমরা সাইবার মনিটরিং, টহল এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করেছি। এটি গুজব হোক বা বাস্তব পরিকল্পনা—আমরা প্রতিটি তথ্য যাচাই-বাছাই করছি। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা সতর্ক আছি।’

র‌্যাব ও পুলিশ উভয় সংস্থার ধারণা, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টির সক্ষমতা নেই, তবে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ও উসকানি ছড়াচ্ছে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দলটির বিদেশে পালিয়ে থাকা কিছু নেতা অনলাইনে “লকডাউন” ঘিরে নাশকতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। দেশের ভেতরে তাদের সংগঠিত শক্তি দুর্বল হলেও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আগাম তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। কেউ অবৈধ কর্মকাণ্ড, নাশকতা বা সংঘর্ষের চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ সরকার পালিয়ে গেছে গণমানুষের প্রতিরোধে। এখন তারা বিদেশ থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এবং থাকবে।’

সংশ্লিষ্টদের মতে, আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচি মূলত প্রতীকী রাজনৈতিক প্রতিবাদ, তবে এর আড়ালে বিভ্রান্তি তৈরির পরিকল্পনা থাকতে পারে। তাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগের লকডাউন কোনও বাস্তব আন্দোলন নয়—এটি তথ্যযুদ্ধের অংশ। সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার জন্য এমন প্রচারণা চলছে। এখন তাদের দেশে সংগঠিত কোনো শক্তি নেই।

তবে গুজব বা অনলাইন প্রচারণা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তাই গোয়েন্দা নজরদারি ও জনসচেতনতা—দুটোই জরুরি বলে মত তাদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি : ঢাকায় বাড়ছে নিরাপত্তা শঙ্কা

আপডেট সময় : ০১:০৯:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সম্ভাব্য নাশকতা ঠেকাতে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান, বাড়ানো হয়েছে টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনাবাহিনীকে।

আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সম্ভাব্য দিন ঠিক করেছে। এ ঘটনাকে ঘিরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উত্তেজনা তৈরি ও সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলটির পলাতক নেতাকর্মীরা নানা উসকানি ও হুমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ডিএমপি সদরদপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেকোনও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে পুলিশ।

গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সময় রাজধানীতে মিছিল করলেও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। লকডাউন ঘোষণার পরও বিভিন্ন এলাকায় দলটির নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করেছে।

এদিকে, লকডাউন কর্মসূচির আগে সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তাই ১৩ নভেম্বর বড় ধরনের নাশকতার সম্ভাবনা কম মনে হলেও বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন

সোমবার (১০ নভেম্বর) ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর, বাংলামোটরসহ বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মেরুল বাড্ডা, শাহজাদপুর ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও নগরবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনাস্থলে তদন্ত চলছে এবং দায়ীদের শনাক্তে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, রাজধানীতে এক লাখ গ্যাস বেলুন উড়িয়ে রাজনৈতিক বার্তা ছড়ানোর পরিকল্পনার অভিযোগে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার (৯ নভেম্বর) ডিএমপি এ তথ্য জানায়।

তার আগের দিন শনিবার (৮ নভেম্বর) ডিএমপি সদর দফতরে জরুরি বৈঠকে ৫০ থানার ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়—যেকোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে ও গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার করতে। পরদিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সাত হাজার পুলিশ সদস্য টহল ও মহড়া শুরু করে। পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবিও প্রস্তুত রয়েছে সম্ভাব্য সহিংসতা ঠেকাতে।

ডিএমপি ও র‌্যাব সূত্র জানায়, ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকার প্রবেশপথ, হোটেল, মেস ও বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোতে বিশেষ তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সাইবার মনিটরিং, গ্রেপ্তার অভিযান ও টহল বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদরদপ্তর সব থানাকে নির্দেশ দিয়েছে—বিভিন্ন জেলা থেকে যেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানীতে ঢুকতে না পারে। এজন্য গণপরিবহন, রেল ও নৌপথেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গোষ্ঠী নাশকতার হুমকি দিচ্ছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে মাঠে আছি। কেউ যদি নাশকতার চেষ্টা করে, কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এমজেডএম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ‘১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে আমরা সাইবার মনিটরিং, টহল এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করেছি। এটি গুজব হোক বা বাস্তব পরিকল্পনা—আমরা প্রতিটি তথ্য যাচাই-বাছাই করছি। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা সতর্ক আছি।’

র‌্যাব ও পুলিশ উভয় সংস্থার ধারণা, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টির সক্ষমতা নেই, তবে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ও উসকানি ছড়াচ্ছে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দলটির বিদেশে পালিয়ে থাকা কিছু নেতা অনলাইনে “লকডাউন” ঘিরে নাশকতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। দেশের ভেতরে তাদের সংগঠিত শক্তি দুর্বল হলেও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আগাম তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। কেউ অবৈধ কর্মকাণ্ড, নাশকতা বা সংঘর্ষের চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ সরকার পালিয়ে গেছে গণমানুষের প্রতিরোধে। এখন তারা বিদেশ থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এবং থাকবে।’

সংশ্লিষ্টদের মতে, আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচি মূলত প্রতীকী রাজনৈতিক প্রতিবাদ, তবে এর আড়ালে বিভ্রান্তি তৈরির পরিকল্পনা থাকতে পারে। তাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগের লকডাউন কোনও বাস্তব আন্দোলন নয়—এটি তথ্যযুদ্ধের অংশ। সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার জন্য এমন প্রচারণা চলছে। এখন তাদের দেশে সংগঠিত কোনো শক্তি নেই।

তবে গুজব বা অনলাইন প্রচারণা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তাই গোয়েন্দা নজরদারি ও জনসচেতনতা—দুটোই জরুরি বলে মত তাদের।