ঢাকা ১১:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কি আদৌ চায়, সংশয় রেহমান সোবহানের
হোসেন জিল্লুর বললেন, সংস্কারের নামে আমরা অন্ধকারে হাঁটছি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৬:২৬:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / 142

অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান।

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের রব তুললেও তা আদৌ চায় কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সিপিডির চেয়ারম্যান, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। ‘সমাজ গবষণা কেন্দ্র’ আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি প্রতিশ্রুতি, প্রতিবন্ধকতা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি নিজের এই সংশয় প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক রেহমান সোবহান ১৯৯০ সালের গণআন্দোলনের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

সংস্কারের নামে বর্তমান সরকার অন্ধকারে হাঁটছে বলে একই ওয়েবিনারে মন্তব্য করেন ব্র্যাকের চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, যিনি ওয়ান-ইলেভেনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্য ছিলেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার দায়িত্ব নিয়েই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। সেই কমিশনগুলোর সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করতে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন এই কমিশন সব সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার কথা। এর পর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার কথা জানানো হয়েছে।

অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান মনে করেন, ড. ইউনূস তার বিশ্বব্যাপী পরিচিতি ও প্রভাব কাজে লাগিয়ে অগ্রাধিকার ঠিক করে সংস্কারের সুযোগ কাজ লাগাতে পারতেন। কিন্তু এখনও তিনি বড় ধরনের কোনও সংস্কারে হাত দেননি বলে তার মনে সংশয় জেগেছে, সরকার আসলে সংস্কার চায় কি না?

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর শেষ হয়ে গেছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন দিলে আর সময় আছে ছয় মাসের মতো। এই সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ অন্যান্য সংস্কার কমিশন মিলে ১৫৮টির বেশি সংস্কার সুপারিশ করা হয়েছে। আপনাদের কি মনে হয়, এই ছয় মাসের মধ্যে এত সংস্কার করা সম্ভব?”

ওয়েবিনারে অংশ নেওয়া অনেকে তখন রেহমান সোবহানের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

অনুজপ্রতীম ড. ইউনূসের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রেহমান সোবহান বলেন, “ড. ইউনূসকে আমি একটি চিঠি দিয়ে বলেছিলাম, সংস্কার কাগজে-কলমে হয় না। কোন্ কোন্‌ বিষয়ে সংস্কার করতে হবে, সেটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ড. ইউনূসের কাছ থেকেই আসা উচিৎ ছিল। কিন্তু সেটা হয় নাই। উনারা সংস্কারের দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ওপর। অথচ অধ্যাপক ইউনূসের সারাবিশ্বে যে পরিচিতি, সারাবিশ্বে ওনি একজন সমাদৃত মানুষ এবং এদেশের নাগরিক সমাজের মধ্যে তার তার ব্যাপক প্রভাব ও কর্তৃত্ব রয়েছে; তার এই কর্তৃত্ব ব্যবহার করে অগ্রধিকার বাচাই করে সংস্কার উনি এগিয়ে নিতে পারতেন, এরপর ওই সংস্কারের ধারাবাহিকতা পরবর্তী নির্বাচিত সরকারর কাছেও দিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু সেটা তিনি করেন নাই।”

স্বাধীনতার পর গঠিত প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রেহমান সোবহান পরবর্তী সময়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকারে কাজ করার আলোকে বলেন, “এই দেশে বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনও সরকারই সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে খুব একটা আ্ন্তরিক ছিল না।”

সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয় থাকলেও গভর্নর হিসাবে আহসান এইচ মনসুরের ভূমিকার প্রশংসা করেন রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, “আহসান এইচ মনসুর বুদ্ধিমত্তার সাথে আর্থিক খাত বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে কিছু সংস্কার করেছেন। আমাদের ব্যাংক খাত মুল সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে গেছে।”

শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “সংস্কারের নামে আমরা অন্ধকারে হাঁটছি। এখন সংস্কার বিষয়টাই একটা সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। মুল সমস্যা কোথায় বা কোথায় নজর দেওয়া দরকার, সেটাই চিহ্নিত করা হয়নি।”

শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে সরকারের মনোযোগ না থাকার সমালোচনা করেন ২০০৭-০৮ সালের অন্তর্বর্তী সরকারে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা হোসেন জিল্লুর।

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সাংবিধানিক শক্তি দিয়ে পরিচালনা করার মতো সংস্কার দরকার। সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ ছাড়া যেন তারা কাজ করতে পারে। কিন্তু সরকার এদিকে নজরই দেয়নি।”

শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গুরুত্বহীন থাকার সমালোচনা করেন ডাকসুর সাবেক জিএস মাহবুব জামান। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক এই সভাপতি বলেন, “ইতিমধ্যে অনেক সংস্কার করেছে। এরমধ্যে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে রাজনৈতিক সংস্কারের নামে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মূছে ফেলার সব ধরনের কাজ হয়ে গেছে।”

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর আর্থিক খাতসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কারের আশা করা হচ্ছিল। ১০টি কমিশনের মাধ্যমে বেশ কিছু সংস্কারের সুপারিশও করা হয়েছে। কিন্তু এসব সুপারিশের বাস্তবায়ন নেই।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশের আর্থিক খাতে যে পরিমাণ অনিয়ম হয়েছে, রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা যেভাবে ধংস করা হয়েছে, তা ঠিক করতে হলে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। কিন্তু দেশের যেসব মানুষ সংস্কার চায়, তাদের ভয়েস কম। আবার যারা সংস্কার চান না, তাদের ভয়েসই বেশি।”

সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর কাছ থেকে যেসব সুপারিশ জমা পড়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করলেও দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক একটা প্রভাব পড়ত। এই সরকার এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন না করলে পরবর্তী সরকার এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে কি না, সেই সন্দেহ প্রকাশ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কি আদৌ চায়, সংশয় রেহমান সোবহানের
হোসেন জিল্লুর বললেন, সংস্কারের নামে আমরা অন্ধকারে হাঁটছি

আপডেট সময় : ০৬:২৬:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের রব তুললেও তা আদৌ চায় কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সিপিডির চেয়ারম্যান, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। ‘সমাজ গবষণা কেন্দ্র’ আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি প্রতিশ্রুতি, প্রতিবন্ধকতা ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি নিজের এই সংশয় প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক রেহমান সোবহান ১৯৯০ সালের গণআন্দোলনের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

সংস্কারের নামে বর্তমান সরকার অন্ধকারে হাঁটছে বলে একই ওয়েবিনারে মন্তব্য করেন ব্র্যাকের চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, যিনি ওয়ান-ইলেভেনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্য ছিলেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার দায়িত্ব নিয়েই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। সেই কমিশনগুলোর সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করতে গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন এই কমিশন সব সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার কথা। এর পর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার কথা জানানো হয়েছে।

অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান মনে করেন, ড. ইউনূস তার বিশ্বব্যাপী পরিচিতি ও প্রভাব কাজে লাগিয়ে অগ্রাধিকার ঠিক করে সংস্কারের সুযোগ কাজ লাগাতে পারতেন। কিন্তু এখনও তিনি বড় ধরনের কোনও সংস্কারে হাত দেননি বলে তার মনে সংশয় জেগেছে, সরকার আসলে সংস্কার চায় কি না?

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর শেষ হয়ে গেছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন দিলে আর সময় আছে ছয় মাসের মতো। এই সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ অন্যান্য সংস্কার কমিশন মিলে ১৫৮টির বেশি সংস্কার সুপারিশ করা হয়েছে। আপনাদের কি মনে হয়, এই ছয় মাসের মধ্যে এত সংস্কার করা সম্ভব?”

ওয়েবিনারে অংশ নেওয়া অনেকে তখন রেহমান সোবহানের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

অনুজপ্রতীম ড. ইউনূসের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রেহমান সোবহান বলেন, “ড. ইউনূসকে আমি একটি চিঠি দিয়ে বলেছিলাম, সংস্কার কাগজে-কলমে হয় না। কোন্ কোন্‌ বিষয়ে সংস্কার করতে হবে, সেটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ড. ইউনূসের কাছ থেকেই আসা উচিৎ ছিল। কিন্তু সেটা হয় নাই। উনারা সংস্কারের দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ওপর। অথচ অধ্যাপক ইউনূসের সারাবিশ্বে যে পরিচিতি, সারাবিশ্বে ওনি একজন সমাদৃত মানুষ এবং এদেশের নাগরিক সমাজের মধ্যে তার তার ব্যাপক প্রভাব ও কর্তৃত্ব রয়েছে; তার এই কর্তৃত্ব ব্যবহার করে অগ্রধিকার বাচাই করে সংস্কার উনি এগিয়ে নিতে পারতেন, এরপর ওই সংস্কারের ধারাবাহিকতা পরবর্তী নির্বাচিত সরকারর কাছেও দিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু সেটা তিনি করেন নাই।”

স্বাধীনতার পর গঠিত প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রেহমান সোবহান পরবর্তী সময়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকারে কাজ করার আলোকে বলেন, “এই দেশে বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোনও সরকারই সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে খুব একটা আ্ন্তরিক ছিল না।”

সরকারের আগ্রহ নিয়ে সংশয় থাকলেও গভর্নর হিসাবে আহসান এইচ মনসুরের ভূমিকার প্রশংসা করেন রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, “আহসান এইচ মনসুর বুদ্ধিমত্তার সাথে আর্থিক খাত বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে কিছু সংস্কার করেছেন। আমাদের ব্যাংক খাত মুল সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে গেছে।”

শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “সংস্কারের নামে আমরা অন্ধকারে হাঁটছি। এখন সংস্কার বিষয়টাই একটা সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। মুল সমস্যা কোথায় বা কোথায় নজর দেওয়া দরকার, সেটাই চিহ্নিত করা হয়নি।”

শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে সরকারের মনোযোগ না থাকার সমালোচনা করেন ২০০৭-০৮ সালের অন্তর্বর্তী সরকারে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা হোসেন জিল্লুর।

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার অর্থাৎ বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সাংবিধানিক শক্তি দিয়ে পরিচালনা করার মতো সংস্কার দরকার। সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপ ছাড়া যেন তারা কাজ করতে পারে। কিন্তু সরকার এদিকে নজরই দেয়নি।”

শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গুরুত্বহীন থাকার সমালোচনা করেন ডাকসুর সাবেক জিএস মাহবুব জামান। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক এই সভাপতি বলেন, “ইতিমধ্যে অনেক সংস্কার করেছে। এরমধ্যে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে রাজনৈতিক সংস্কারের নামে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মূছে ফেলার সব ধরনের কাজ হয়ে গেছে।”

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর আর্থিক খাতসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কারের আশা করা হচ্ছিল। ১০টি কমিশনের মাধ্যমে বেশ কিছু সংস্কারের সুপারিশও করা হয়েছে। কিন্তু এসব সুপারিশের বাস্তবায়ন নেই।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশের আর্থিক খাতে যে পরিমাণ অনিয়ম হয়েছে, রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা যেভাবে ধংস করা হয়েছে, তা ঠিক করতে হলে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। কিন্তু দেশের যেসব মানুষ সংস্কার চায়, তাদের ভয়েস কম। আবার যারা সংস্কার চান না, তাদের ভয়েসই বেশি।”

সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর কাছ থেকে যেসব সুপারিশ জমা পড়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করলেও দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক একটা প্রভাব পড়ত। এই সরকার এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন না করলে পরবর্তী সরকার এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে কি না, সেই সন্দেহ প্রকাশ করেন এই অর্থনীতিবিদ।