অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মৌলিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে, জানালো হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
- আপডেট সময় : ১২:১৬:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
- / 307

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপ নাগরিকদের মৌলিক স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি দাবি করেছে, বিচারব্যবস্থার সংস্কারের পরিবর্তে কর্তৃপক্ষ সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমর্থকদের দমন করার নীতি গ্রহণ করেছে। বুধবার (২১ মে ২০২৫) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই মন্তব্য করে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চলতি মাসের ১২ তারিখ সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সভা, সমাবেশ, প্রকাশনা ও অনলাইন প্রচারণার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, আগের সরকারের সময়েও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে দমনমূলক নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল, আর বর্তমান সিদ্ধান্ত সেই ধাঁচেই মৌলিক স্বাধীনতা লঙ্ঘনের আশঙ্কা তৈরি করছে।
গুম ইস্যুতে প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের সরকারের আমলে গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহিতায় কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। গুম প্রতিরোধে তৈরি করা খসড়া আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এইচআরডব্লিউ-এর এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, “গুমের শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যে কাঠামো প্রয়োজন, তা খসড়া আইনে নেই।”
আওয়ামী লীগের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে হতাশাজনক আখ্যা দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, সরকার বলেছে—সাবেক ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে, ফলে এ সিদ্ধান্ত কার্যত দলটিকে নিষিদ্ধ করার শামিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা-সংগ্রামের পূর্বকাল থেকেই সক্রিয় একটি দল এবং তাদের রয়েছে একটি বড় জনসমর্থন। এই সিদ্ধান্ত কোটি কোটি সমর্থকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমিত করছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা জারির পর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধনও বাতিল করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, যদিও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অপরাধের বিচার হওয়া প্রয়োজন, তবে রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা নাগরিকদের মৌলিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সামিল। এতে করে আগের সরকারের বিরোধী দল দমননীতিরই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে।


















